মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন ২০২৬ | Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

Contents
    মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন ২০২৬ | Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

    মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান সাজেশন ২০২৬ | Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

    ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ভৌত বিজ্ঞান (Physical Science) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়ার পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো প্র্যাকটিস করা প্রয়োজন। নীচে সমস্ত অধ্যায় থেকে বাছাই করা ১ নম্বর, ২ নম্বরের এবং ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো।

    বিভাগ - ক (অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর - মান ১)

    ১. ওজোন স্তরের ক্ষয়ের জন্য প্রধানত দায়ী গ্যাস কোনটি?
    উত্তর: ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)।

    ২. বায়োগ্যাসের প্রধান উপাদান কী?
    উত্তর: মিথেন (CH4)।

    ৩. কেলভিন স্কেলে প্রমাণ তাপমাত্রার মান কত?
    উত্তর: 273 K।

    ৪. বয়েলের সূত্রে ধ্রুবক রাশিগুলি কী কী?
    উত্তর: গ্যাসের ভর এবং গ্যাসের উষ্ণতা।

    ৫. চার্লসের সূত্রের V-t লেখচিত্রটি কেমন?
    উত্তর: মূলবিন্দুগামী সরলরেখা।

    ৬. এস. আই. (SI) পদ্ধতিতে তাপের একক কী?
    উত্তর: জুল (Joule)।

    ৭. তাপ ও তড়িৎ সুপরিবাহী একটি অধাতুর নাম লেখো।
    উত্তর: গ্রাফাইট।

    ৮. লেন্সের ক্ষমতার একক কী?
    উত্তর: ডায়োপটার (Diopter)।

    ৯. দন্ত চিকিৎসকরা কী ধরনের দর্পণ ব্যবহার করেন?
    উত্তর: অবতল দর্পণ।

    ১০. সুস্থ চোখের স্পষ্ট দর্শনের ন্যূনতম দূরত্ব কত?
    উত্তর: ২৫ সেন্টিমিটার।

    ১১. আলোর বিচ্ছুরণের একটি প্রাকৃতিক দৃষ্টান্ত দাও।
    উত্তর: রামধনু।

    ১২. আধানের এস. আই. (SI) একক কী?
    উত্তর: কুলম্ব (Coulomb)।

    ১৩. ফিউজ তার কোন ধাতু দিয়ে তৈরি হয়?
    উত্তর: টিন ও সিসার সংকর ধাতু দিয়ে।

    ১৪. ১ কিলোওয়াট-ঘণ্টা (1 kWh) = কত জুল?
    উত্তর: ৩.৬ × ১০ জুল।

    ১৫. তেজস্ক্রিয়তার একক কী?
    উত্তর: বেকারেল (Bq) বা কুরি (Ci)।

    ১৬. নিউক্লিয় রিয়্যাক্টরে জ্বালানি হিসেবে কী ব্যবহৃত হয়?
    উত্তর: ইউরেনিয়াম-২৩৫ (U-235)।

    ১৭. আধুনিক পর্যায় সারণিতে হ্যালোজেন মৌলগুলি কোন গ্রুপে অবস্থিত?
    উত্তর: ১৭ নং শ্রেণিতে।

    ১৮. পর্যায় সারণিতে সন্ধিগত মৌলের সংখ্যা কয়টি?
    উত্তর: সাধারণত ৩০টি ধরা হয় (তবে পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে, যেমন- স্ক্যান্ডিয়াম থেকে জিঙ্ক)।

    ১৯. একটি তেজস্ক্রিয় নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নাম লেখো।
    উত্তর: রেডন (Rn)।

    ২০. NaCl যৌগে কী ধরনের রাসায়নিক বন্ধন দেখা যায়?
    উত্তর: তড়িৎযোজী বা আয়নীয় বন্ধন।

    ২১. সমযোজী ত্রিবন্ধনযুক্ত একটি মৌলিক অণুর নাম লেখো।
    উত্তর: নাইট্রোজেন (N2)।

    ২২. তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় জারণ কোথায় ঘটে?
    উত্তর: অ্যানোড (Anode) এ।

    ২৩. তামার চামচে রূপার প্রলেপ দিতে ক্যাথোড হিসেবে কী ব্যবহার করবে?
    উত্তর: তামার চামচ।

    ২৪. ওলিয়ামের রাসায়নিক সংকেত কী?
    উত্তর: H2S2O7

    ২৫. স্পর্শ পদ্ধতিতে সালফিউরিক অ্যাসিড প্রস্তুতিতে অনুঘটক হিসেবে কী ব্যবহৃত হয়?
    উত্তর: ভ্যানাডিয়াম পেন্টক্সাইড (V2O5)।

    ২৬. লাইকার অ্যামোনিয়া কী?
    উত্তর: ০.৮৮ আপেক্ষিক গুরুত্ববিশিষ্ট ৩৫% গাঢ় অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ।

    ২৭. অ্যালুমিনিয়ামের প্রধান আকরিকের নাম কী?
    উত্তর: বক্সাইট।

    ২৮. জার্মান সিলভারে কোন উপাদানটি থাকে না যা নামের মধ্যে আছে?
    উত্তর: সিলভার বা রূপা।

    ২৯. কার্বন বিজারণ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায় এমন একটি ধাতুর নাম লেখো।
    উত্তর: জিঙ্ক (Zn) বা আয়রন (Fe)।

    ৩০. সরলতম অ্যালকেনের নাম কী?
    উত্তর: মিথেন।

    ৩১. ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথারের মধ্যে কী ধরনের সমাবয়বতা দেখা যায়?
    উত্তর: কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা।

    ৩২. পিভিসি (PVC)-এর পুরো নাম কী?
    উত্তর: পলি ভিনাইল ক্লোরাইড।

    ৩৩. ভিনেগারের প্রধান উপাদান কী?
    উত্তর: অ্যাসিটিক অ্যাসিড (লঘু জলীয় দ্রবণ)।

    ৩৪. আলেয়া সৃষ্টিতে কোন গ্যাসটি দায়ী?
    উত্তর: মিথেন।

    ৩৫. গাড়ির হেডলাইটে কোন দর্পণ ব্যবহৃত হয়?
    উত্তর: অবতল দর্পণ।

    ৩৬. সূর্যের শক্তির উৎস কী?
    উত্তর: নিউক্লিয় সংযোজন।

    ৩৭. রোধাঙ্কের এস. আই. (SI) একক কী?
    উত্তর: ওহম-মিটার (Ω-m)।

    ৩৮. একটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো যা জৈব যৌগ।
    উত্তর: মিথেন (CH4)।

    ৩৯. ফায়ার আইস (Fire Ice) কাকে বলে?
    উত্তর: মিথেন হাইড্রেটকে।

    ৪০. STP-তে ১ মোল যেকোনো গ্যাসের আয়তন কত?
    উত্তর: ২২.৪ লিটার।

    ৪১. লোহার ওপর জিংকের প্রলেপ দেওয়াকে কী বলে?
    উত্তর: গ্যালভানাইজেশন।

    ৪২. নেসলার বিকারকের বর্ণ কী?
    উত্তর: বর্ণহীন (কিন্তু অ্যামোনিয়ার সংস্পর্শে বাদামী হয়)।

    ৪৩. একটি জৈব ভঙ্গুর পলিমারের নাম লেখো।
    উত্তর: সেলুলোজ বা স্টার্চ।

    ৪৪. ফল পাকাতে কোন গ্যাস ব্যবহৃত হয়?
    উত্তর: ইথিলিন।

    ৪৫. দীর্ঘ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া প্রতিকারে কোন লেন্স ব্যবহার করা হয়?
    উত্তর: উত্তল লেন্স।

    ৪৬. α, β এবং γ রশ্মির মধ্যে কার ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি?
    উত্তর: গামা (γ) রশ্মির।

    ৪৭. পর্যায় সারণিতে সবচেয়ে তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল কোনটি?
    উত্তর: ফ্লোরিন (F)।

    ৪৮. জলের তড়িৎ বিশ্লেষণে অ্যানোডে কোন গ্যাস উৎপন্ন হয়?
    উত্তর: অক্সিজেন।

    ৪৯. ব্রাশ বা কাঁসা সংকর ধাতুর প্রধান উপাদান কী?
    উত্তর: তামা (Cu)।

    ৫০. IUPAC নাম লেখো: CH3COOH
    উত্তর: ইথানোয়িক অ্যাসিড।

    বিভাগ - খ (সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন - মান ২)

    ১. গ্রিনহাউস এফেক্ট বা প্রভাব বলতে কী বোঝো?
    উত্তর: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি গ্যাস সূর্যের ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তাপশোষিত হতে দেয় কিন্তু পৃথিবী থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয়। ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, একে গ্রিনহাউস এফেক্ট বলে।

    ২. বয়েল ও চার্লসের সূত্রের সমন্বিত রূপটি প্রতিষ্ঠা করো।
    উত্তর: মনে করি, নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের চাপ P, আয়তন V এবং তাপমাত্রা T।
    বয়েলের সূত্রানুযায়ী: V ∝ 1/P (যখন T স্থির)।
    চার্লসের সূত্রানুযায়ী: V ∝ T (যখন P স্থির)।
    যৌগিক ভেদের উপপাদ্য অনুযায়ী: V ∝ T/P বা, PV = kT (k হলো ধ্রুবক)। এটিই সমন্বিত রূপ।

    ৩. অ্যাভোগাড্রো সূত্রটি বিবৃত করো।
    উত্তর: একই উষ্ণতা ও চাপে সম আয়তন বিশিষ্ট সকল গ্যাসে (মৌলিক বা যৌগিক) সমান সংখ্যক অণু বর্তমান থাকে।

    ৪. তাপ পরিবাহিতাঙ্ক কাকে বলে?
    উত্তর: একক বেদ ও একক প্রস্থচ্ছেদযুক্ত কোনো পদার্থের দুই বিপরীত পৃষ্ঠের উষ্ণতার পার্থক্য একক হলে, লম্বভাবে যে পরিমাণ তাপ পরিবাহিত হয়, তাকে ওই পদার্থের তাপ পরিবাহিতাঙ্ক বলে।

    ৫. আলোর প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো।
    উত্তর: ১) আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে। ২) নির্দিষ্ট দুটি মাধ্যম ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে আপতন কোণের সাইন (sin i) ও প্রতিসরণ কোণের সাইন (sin r)-এর অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক হয় (স্নেলের সূত্র)।

    ৬. উত্তল লেন্সের ফোকাস বা ফোকাস বিন্দু কাকে বলে?
    উত্তর: প্রধান অক্ষের সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ উত্তল লেন্সে প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের ওপর যে নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয়, তাকে ওই লেন্সের ফোকাস বিন্দু বলে।

    ৭. দিনের বেলা আকাশকে নীল দেখায় কেন?
    উত্তর: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত ধূলিকণা ও গ্যাসীয় অণু দ্বারা সূর্যের আলোর বিক্ষেপণ ঘটে। র‍্যালের বিক্ষেপণ সূত্রানুযায়ী, নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হওয়ায় এর বিক্ষেপণ সবথেকে বেশি হয় এবং এই বিক্ষিপ্ত নীল আলো আমাদের চোখে পৌঁছায় বলে আকাশ নীল দেখায়।

    ৮. ওহমের সূত্রটি লেখো।
    উত্তর: উষ্ণতা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে, কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎপ্রবাহ মাত্রা ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদের সমানুপাতিক হয়।

    ৯. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়মটি লেখো।
    উত্তর: কোনো ব্যক্তি যদি তড়িৎবাহী তার বরাবর, তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখে হাত ছড়িয়ে এমনভাবে সাঁতার কাটে যাতে তার মুখ সর্বদা চৌম্বক শলাকার দিকে থাকে, তবে শলাকার উত্তর মেরু ওই ব্যক্তির বাম হাতের দিকে বিক্ষিপ্ত হবে।

    ১০. ফ্লেমিং-এর বামহস্ত নিয়মটি লেখো।
    উত্তর: বাম হাতের তর্জনী, মধ্যমা এবং বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠকে পরস্পরের সমকোণে রেখে প্রসারিত করলে, যদি তর্জনী চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক এবং মধ্যমা তড়িৎপ্রবাহের দিক নির্দেশ করে, তবে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ পরিবাহীর গতির অভিমুখ বা পরিবাহীর ওপর ক্রিয়াশীল বলের অভিমুখ নির্দেশ করবে।

    ১১. ভর ত্রুটি (Mass Defect) বলতে কী বোঝো?
    উত্তর: কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসের প্রকৃত ভর, নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনগুলির মোট ভরের চেয়ে কিছুটা কম হয়। ভরের এই পার্থক্যকে ভর ত্রুটি বলে। এই ভরই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

    ১২. পর্যায় সারণিতে মজেলের (Moseley) অবদান কী?
    উত্তর: মজলে এক্স-রশ্মি বর্ণালী পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে, মৌলের পারমাণবিক সংখ্যাই হলো মৌলের মূল বৈশিষ্ট্য, পারমাণবিক গুরুত্ব নয়। এর ওপর ভিত্তি করেই আধুনিক পর্যায় সূত্র গঠিত হয়েছে।

    ১৩. আয়নীয় যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয় কেন?
    উত্তর: আয়নীয় যৌগগুলি বিপরীত আধানযুক্ত আয়ন দ্বারা গঠিত এবং এদের মধ্যে তীব্র স্থির-তড়িৎ আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শক্তিশালী বন্ধন ভাঙতে প্রচুর তাপশক্তির প্রয়োজন হয়, তাই এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয়।

    ১৪. তড়িৎ লেপন কাকে বলে? এর উদ্দেশ্য কী?
    উত্তর: তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে অপেক্ষাকৃত বেশি সক্রিয় ধাতুর ওপর কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ দেওয়াকে তড়িৎ লেপন বলে। উদ্দেশ্য: ১) ধাতুকে জলবায়ুর হাত থেকে রক্ষা করা বা মরচে পড়া রোধ করা। ২) সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা।

    ১৫. পরীক্ষাগারে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রস্তুতির প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্য ও সমীকরণ লেখো।
    উত্তর: দ্রব্য: সোডিয়াম নাইট্রাইট (NaNO2) ও অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH4Cl)।
    সমীকরণ: NaNO2 + NH4Cl → NaCl + N2↑ + 2H2O

    ১৬. স্পর্শ পদ্ধতিতে H2SO4 প্রস্তুতির শর্তগুলি লেখো।
    উত্তর: ১) বিশুদ্ধ ও শুষ্ক SO2 ও O2 গ্যাস ব্যবহার। ২) তাপমাত্রা ৪৫০°C। ৩) ১-২ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ। ৪) অনুঘটক হিসেবে ভ্যানাডিয়াম পেন্টক্সাইড (V2O5) বা প্লাটিনাইজড অ্যাসবেস্টস।

    ১৭. খনিজ ও আকরিকের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
    উত্তর: ১) সব আকরিকই খনিজ, কিন্তু সব খনিজ আকরিক নয়। ২) খনিজ থেকে সহজে ও লাভজনকভাবে ধাতু নিষ্কাশন করা নাও যেতে পারে, কিন্তু আকরিক থেকে সহজে ও লাভজনকভাবে ধাতু নিষ্কাশন করা যায়।

    ১৮. থার্মিট পদ্ধতি কী?
    উত্তর: উচ্চ উষ্ণতায় ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3)-এর সাথে অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণের বিক্রিয়ায় গলিত আয়রন উৎপন্ন হয়। এই পদ্ধতিকে থার্মিট পদ্ধতি বলে। এটি রেললাইন জোড়া দিতে ব্যবহৃত হয়।

    ১৯. কার্যকরী মূলক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
    উত্তর: যে সব সক্রিয় মূলক বা গ্রুপ জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত থেকে যৌগের প্রকৃতি ও রাসায়নিক ধর্ম নির্ধারণ করে, তাদের কার্যকরী মূলক বলে। যেমন: অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলক -OH (হাইড্রক্সিল)।

    ২০. সমাবয়বতা (Isomerism) কাকে বলে?
    উত্তর: একই আণবিক সংকেত বিশিষ্ট কিন্তু ভিন্ন গঠন ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী যৌগগুলিকে পরস্পরের সমাবয়ব বা আইসোমার বলে এবং এই ঘটনাকে সমাবয়বতা বলে।

    ২১. গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি ফলাফল লেখো।
    উত্তর: ১) মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাবে এবং উপকূলবর্তী এলাকা প্লাবিত হবে। ২) আবহাওয়ার প্রকৃতি পরিবর্তিত হবে, ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রকোপ বাড়বে।

    ২২. আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাসের মধ্যে পার্থক্য কী?
    উত্তর: যে সব গ্যাস PV=nRT সমীকরণ মেনে চলে তারা আদর্শ গ্যাস। আর যারা মেনে চলে না তারা বাস্তব গ্যাস। প্রকৃতিতে কোনো গ্যাসই পুরোপুরি আদর্শ নয়।

    ২৩. প্রতিসরাঙ্ক কাকে বলে?
    উত্তর: নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে, শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ এবং অন্য কোনো মাধ্যমে আলোর বেগের অনুপাতকে ওই মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্ক বলে।

    ২৪. গাড়ি চালকদের 'Rear View Mirror' হিসেবে উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয় কেন?
    উত্তর: উত্তল দর্পণে সর্বদা বস্তুর চেয়ে ছোট এবং সোজা প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। এছাড়া উত্তল দর্পণের দৃষ্টি ক্ষেত্র (Field of View) অনেক বড়, তাই চালক পেছনের অনেকটা এলাকা দেখতে পান।

    ২৫. রোধের সমান্তরাল সমবায়ের বৈশিষ্ট্য লেখো।
    উত্তর: ১) প্রতিটি রোধের দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদ সমান থাকে। ২) তুল্য রোধের মান সমবায়ের ক্ষুদ্রতম রোধের মানের চেয়েও কম হয়।

    ২৬. নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
    উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় কোনো ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ধীরগতির নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে তা প্রায় সমান ভরের দুটি হালকা নিউক্লিয়াসে ভেঙে যায় এবং প্রচুর শক্তি নির্গত হয়, তাকে নিউক্লিয় বিভাজন বলে। যেমন: ইউরেনিয়ামের বিভাজন।

    ২৭. মেন্ডেলিফের পর্যায় সূত্রটি লেখো।
    উত্তর: মৌলগুলির ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মগুলি তাদের পারমাণবিক গুরুত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যায়ক্রমে পুনরাবৃত্ত হয়।

    ২৮. লুইস ডট গঠন চিত্র আঁকো: জল (H2O)।
    উত্তর: অক্সিজেনের শেষ কক্ষে ৬টি ইলেকট্রন এবং হাইড্রোজেনের ১টি। অক্সিজেন দুটি হাইড্রোজেনের সাথে ১টি করে ইলেকট্রন শেয়ার করে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে অষ্টক পূর্ণ করে। (চিত্রটি পাঠ্যবই থেকে দেখে অভ্যাস করবে)।

    ২৯. ক্যাথোড ও অ্যানোড কাকে বলে?
    উত্তর: তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যাটারির নেগেটিভ মেরুর সাথে যুক্ত তড়িৎদ্বারকে ক্যাথোড এবং পজিটিভ মেরুর সাথে যুক্ত তড়িৎদ্বারকে অ্যানোড বলে।

    ৩০. তরল অ্যামোনিয়ার ব্যবহার লেখো।
    উত্তর: ১) হিমায়ক রূপে বরফ তৈরির কারখানায় ও কোল্ড স্টোরেজে ব্যবহৃত হয়। ২) বিভিন্ন নাইট্রোজেন ঘটিত সার প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।

    ৩১. ধাতু সংকর বা অ্যালয় (Alloy) ব্যবহারের সুবিধা কী?
    উত্তর: ১) ধাতুর কাঠিন্য ও ঘাতসহনশীলতা বৃদ্ধি পায়। ২) মরচে পড়া রোধ করা যায়। ৩) গলনাঙ্ক কমানো যায়।

    ৩২. ক্যাটিনেশন ধর্ম কাকে বলে?
    উত্তর: কার্বন পরমাণুগুলি নিজেদের মধ্যে সমযোজী বন্ধন (এক, দ্বিন বা ত্রিবন্ধন) দ্বারা যুক্ত হয়ে সুদীর্ঘ কার্বন শৃঙ্খল গঠন করার যে ধর্ম দেখায়, তাকে ক্যাটিনেশন ধর্ম বলে।

    ৩৩. ডিনেচার্ড স্পিরিট বা মেথিলেটেড স্পিরিট কী?
    উত্তর: রেকটিফায়েড স্পিরিটকে পানের অযোগ্য করার জন্য এর সাথে প্রায় ১০% বিষাক্ত মিথানল, সামান্য পিরিডিন ও ন্যাপথা মেশানো হয়। এই মিশ্রণকে ডিনেচার্ড স্পিরিট বলে।

    ৩৪. বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ারের গুরুত্ব লেখো।
    উত্তর: এই স্তরে ওজোন গ্যাস থাকে যা সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে জীবজগতকে রক্ষা করে। এছাড়া এই স্তরে ঝড়-বৃষ্টি হয় না বলে জেট প্লেন চলাচল করতে পারে।

    ৩৫. গ্যাসের ব্যাপন বলতে কী বোঝো?
    উত্তর: বাহ্যিক কোনো সাহায্য ছাড়াই দুই বা ততোধিক গ্যাস তাদের ঘনত্ব বা আণবিক গুরুত্ব নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরস্পরের সঙ্গে মিশে গিয়ে সমসত্ত্ব মিশ্রণ তৈরি করার ঘটনাকে গ্যাসের ব্যাপন বলে।

    ৩৬. কোনো মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্ক কি ১-এর কম হতে পারে? যুক্তি দাও।
    উত্তর: না। কারণ পরম প্রতিসরাঙ্ক μ = c/v। যেহেতু শূন্যস্থানে আলোর বেগ (c) সর্বদা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আলোর বেগের (v) চেয়ে বেশি, তাই μ-এর মান সর্বদা ১ অপেক্ষা বড় হয়।

    ৩৭. বৈদ্যুতিক হিটারে নাইক্রোম তার ব্যবহার করা হয় কেন?
    উত্তর: নাইক্রোম তারের রোধ ও গলনাঙ্ক খুব বেশি। তাই উচ্চ বিভব প্রভেদেও এটি গলে যায় না এবং প্রচুর তাপ উৎপন্ন করতে পারে। এছাড়া এটি বায়ুর সংস্পর্শে জারিত হয় না।

    ৩৮. কুলম্বের সূত্রটি (স্থির তড়িৎ) লেখো।
    উত্তর: দুটি বিন্দু আধানের মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলের মান আধান দুটির গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।

    ৩৯. ডোবেরাইনারের ত্রয়ী সূত্রটি লেখো।
    উত্তর: রাসায়নিক ধর্মে সাদৃশ্যপূর্ণ তিনটি মৌলকে পারমাণবিক গুরুত্ব অনুযায়ী সাজালে মাঝের মৌলটির পারমাণবিক গুরুত্ব অপর দুটি মৌলের পারমাণবিক গুরুত্বের গড় মানের প্রায় সমান হয়।

    ৪০. H2S গ্যাস প্রস্তুতির নীতি লেখো।
    উত্তর: সাধারণ উষ্ণতায় ফেরাস সালফাইড (FeS)-এর সঙ্গে লঘু সালফিউরিক অ্যাসিডের (H2SO4) বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S) গ্যাস উৎপন্ন হয়।
    FeS + H2SO4 → FeSO4 + H2S↑

    ৪১. জৈব ও অজৈব যৌগের দুটি পার্থক্য লেখো।
    উত্তর: ১) জৈব যৌগে কার্বন অপরিহার্য, কিন্তু অজৈব যৌগে কার্বন থাকতেও পারে, নাও পারে। ২) জৈব যৌগগুলি সাধারণত সমযোজী হয় এবং গলনাঙ্ক কম, অজৈব যৌগগুলি সাধারণত তড়িৎযোজী হয় এবং গলনাঙ্ক বেশি।

    ৪২. পলিমারাইজেশন বা বহুকরণ বিক্রিয়া কাকে বলে?
    উত্তর: যে বিক্রিয়ায় বহু সংখ্যক সরল অণু (মনোমার) পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ অণু (পলিমার) গঠন করে, তাকে পলিমারাইজেশন বলে। যেমন: ইথিলিন থেকে পলিথিন।

    ৪৩. আলোর বিচ্ছুরণ কাকে বলে?
    উত্তর: সাদা বা যৌগিক আলো প্রিজমের মতো কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বিশ্লিষ্ট হয়ে বিভিন্ন বর্ণের আলোতে বিভক্ত হওয়ার ঘটনাকে আলোর বিচ্ছুরণ বলে।

    ৪৪. শর্ট সার্কিট কী?
    উত্তর: কোনো কারণে বৈদ্যুতিক বর্তনীর পজিটিভ ও নেগেটিভ তার (লাইভ ও নিউট্রাল) একে অপরের সংস্পর্শে চলে এলে বর্তনীর রোধ প্রায় শূন্য হয়ে যায় এবং প্রবল তড়িৎপ্রবাহ ঘটে। একে শর্ট সার্কিট বলে।

    ৪৫. তড়িৎ বিশ্লেষণের দুটি প্রয়োগ উল্লেখ করো।
    উত্তর: ১) ধাতু নিষ্কাশন (যেমন সোডিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম)। ২) ধাতু বিশোধন (যেমন তামার বিশোধন)।

    ৪৬. অ্যামোনিয়া গ্যাসকে শুষ্ক করতে পোড়াচুন (CaO) ব্যবহার করা হয়, কিন্তু H2SO4 বা P2O5 ব্যবহার করা হয় না কেন?
    উত্তর: অ্যামোনিয়া ক্ষারীয় গ্যাস। তাই এটি অ্যাসিডিক H2SO4 বা P2O5-এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ উৎপন্ন করে। কিন্তু CaO ক্ষারীয় হওয়ায় অ্যামোনিয়ার সাথে বিক্রিয়া করে না, শুধু জল শোষণ করে।

    ৪৭. সাবান কী?
    উত্তর: উচ্চ আণবিক গুরুত্ববিশিষ্ট ফ্যাটি অ্যাসিডের (যেমন স্টিয়ারিক অ্যাসিড, পামিটিক অ্যাসিড) সোডিয়াম বা পটাশিয়াম লবণকে সাবান বলে।

    ৪৮. LPG-এর প্রধান উপাদান কী এবং এর ব্যবহার কী?
    উত্তর: প্রধান উপাদান বিউটেন। এটি রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

    ৪৯. লেন্সের আলোক কেন্দ্র বলতে কী বোঝো?
    উত্তর: লেন্সের প্রধান অক্ষের ওপর অবস্থিত যে বিন্দুর মধ্য দিয়ে আলোক রশ্মি গেলে নির্গত রশ্মি ও আপতিত রশ্মি সমান্তরাল হয়, সেই বিন্দুকে আলোক কেন্দ্র বলে। পাতলা লেন্সের ক্ষেত্রে আলোকরশ্মি সোজা বেরিয়ে যায়।

    ৫০. দুটি ধাতুকল্পের নাম ও সংকেত লেখো।
    উত্তর: আর্সেনিক (As) এবং অ্যান্টিমনি (Sb)।

    বিভাগ - গ (দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন - মান ৩)

    এই বিভাগে ৩ নম্বরের প্রশ্ন দেওয়া হলো। গাণিতিক রূপ এবং সমীকরণগুলি নিচে নিচে দেওয়া হলো যাতে বুঝতে সুবিধা হয়।

    গ্যাস ও রাসায়নিক গণনা

    ১. চার্লস ও বয়েলের সূত্রের সমন্বয়ে আদর্শ গ্যাস সমীকরণ (PV = nRT) প্রতিষ্ঠা করো।
    উত্তর:
    মনে করি, নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের চাপ P, আয়তন V এবং পরম উষ্ণতা T।
    বয়েলের সূত্রানুযায়ী:
    $V \propto \frac{1}{P}$ (যখন T স্থির)।
    চার্লসের সূত্রানুযায়ী:
    $V \propto T$ (যখন P স্থির)।
    যৌগিক ভেদের উপপাদ্য অনুযায়ী:
    $V \propto \frac{T}{P}$
    বা, $PV = kT$ (k ধ্রুবক)।
    ১ মোল গ্যাসের ক্ষেত্রে k = R (সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক)।
    অতএব, n মোল গ্যাসের জন্য সমীকরণটি হলো:
    PV = nRT

    ২. গ্যাসের আণবিক গুরুত্ব (M) এবং বাষ্প ঘনত্বের (D) মধ্যে সম্পর্কটি প্রতিষ্ঠা করো।
    উত্তর:
    আমরা জানি,
    বাষ্প ঘনত্ব (D) = (নির্দিষ্ট আয়তন গ্যাসের ভর) / (সমআয়তন হাইড্রোজেন গ্যাসের ভর)।
    অ্যাভোগাড্রো সূত্রানুযায়ী, সমআয়তনে সমসংখ্যক অণু থাকে।
    বা, D = (গ্যাসের 1টি অণুর ভর) / (হাইড্রোজেনের 1টি অণুর ভর)।
    যেহেতু হাইড্রোজেনের 1টি অণুর ভর = 2টি পরমাণুর ভর।
    বা, D = M / 2
    অতএব,
    M = 2D
    (অর্থাৎ আণবিক গুরুত্ব বাষ্প ঘনত্বের দ্বিগুণ)।

    ৩. আদর্শ আচরণ থেকে বাস্তব গ্যাসের বিচ্যুতির দুটি কারণ লেখো।
    উত্তর:
    ১) আদর্শ গ্যাসের অণুগুলি বিন্দুভর সদৃশ এবং এদের আয়তন পাত্রের আয়তন তুলনায় নগণ্য ধরা হয়, কিন্তু বাস্তবে অণুগুলির নির্দিষ্ট আয়তন আছে।
    ২) আদর্শ গ্যাসের অণুগুলির মধ্যে কোনো আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল কাজ করে না ধরা হয়, কিন্তু বাস্তব গ্যাসের অণুগুলির মধ্যে ক্ষীণ আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল কাজ করে।

    তাপের ঘটনাসমূহ

    ৪. কঠিনের তাপীয় প্রসারণ গুণাঙ্ক $\alpha$, $\beta$ এবং $\gamma$-এর মধ্যে সম্পর্কটি লেখো।
    উত্তর:
    দৈর্ঘ্য প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\alpha$), ক্ষেত্র প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\beta$) এবং আয়তন প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\gamma$)-এর সম্পর্কটি হলো:
    $\alpha = \frac{\beta}{2} = \frac{\gamma}{3}$
    বা,
    $6\alpha = 3\beta = 2\gamma$

    ৫. তরলের আপাত ও প্রকৃত প্রসারণ গুণাঙ্কের মধ্যে সম্পর্ক কী? এদের মধ্যে কোনটি তরলের নিজস্ব ধর্ম?
    উত্তর:
    সম্পর্ক:
    তরলের প্রকৃত প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\gamma_r$) = তরলের আপাত প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\gamma_a$) + পাত্রের আয়তন প্রসারণ গুণাঙ্ক ($\gamma_g$)।
    তরলের প্রকৃত প্রসারণ গুণাঙ্ক হলো তরলের নিজস্ব ধর্ম, কারণ এটি পাত্রের প্রসারণের ওপর নির্ভর করে না।

    ৬. তাপ পরিবহণ এবং তড়িৎ পরিবহণের মধ্যে দুটি সাদৃশ্য ও একটি বৈসাদৃশ্য লেখো।
    উত্তর:
    সাদৃশ্য:
    ১) তাপমাত্রার পার্থক্য থাকলে তাপ প্রবাহিত হয়, বিভব পার্থক্য থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হয়।
    ২) উভয় ক্ষেত্রেই রোধের সূত্রগুলো প্রায় একই রকম।
    বৈসাদৃশ্য:
    তাপ পরিবহণে মাধ্যমের কণাগুলি উত্তপ্ত হয়, কিন্তু তড়িৎ পরিবহণে পরিবাহী তার গরম হলেও (জুলের তাপ) মূল কারণ ইলেকট্রনের প্রবাহ।

    আলো

    ৭. প্রিজমের ক্ষেত্রে প্রমাণ করো $\delta = i_1 + i_2 - A$।
    উত্তর:
    (বইয়ের চিত্রসহ জ্যামিতিক প্রমাণটি অভ্যাস করবে)।
    সংক্ষেপে: ত্রিভুজের ধর্ম ও প্রতিসরণের সূত্র ব্যবহার করে দেখানো হয় যে,
    চ্যুতি কোণ ($\delta$) = (প্রথম পৃষ্ঠে আপতন কোণ + দ্বিতীয় পৃষ্ঠে প্রতিসরণ কোণ) - প্রিজম কোণ।
    অর্থাৎ,
    $\delta = i_1 + i_2 - A$

    ৮. দেখাও যে, আয়তাকার কাঁচের স্ল্যাবে আলোর প্রতিসরণের ফলে কোনো চ্যুতি হয় না, শুধু পার্শ্বসরণ ঘটে।
    উত্তর:
    আয়তাকার স্ল্যাবের দুটি তল সমান্তরাল হওয়ায়,
    প্রথম তলে আপতন কোণ ($i_1$) এবং দ্বিতীয় তল থেকে নির্গমন কোণ ($i_2$) সমান হয়।
    ফলে মোট চ্যুতি,
    $\delta = i_1 - i_2 = 0$ হয়।
    তাই রশ্মির কোনো কৌণিক চ্যুতি ঘটে না, কেবল পার্শ্বসরণ ঘটে।

    ৯. উত্তল লেন্সের সাহায্যে কীভাবে বস্তুর সদ, অবশীর্ষ ও বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠন করা যায়? রেখাচিত্র আঁকো।
    উত্তর: বস্তুকে উত্তল লেন্সের ফোকাস (F) এবং দ্বিগুণ ফোকাস দূরত্বের (2F) মধ্যে রাখলে লেন্সের অপরপাশে 2F-এর বাইরে সদ, অবশীর্ষ এবং বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। (চিত্রটি পাঠ্যবই থেকে দেখে নেবে)।

    ১০. হ্রস্বদৃষ্টি বা মায়োপিয়া কী? এর প্রতিকার কী?
    উত্তর: চোখ যখন কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখে কিন্তু দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায় না, তাকে মায়োপিয়া বলে।
    প্রতিকার: উপযুক্ত ফোকাস দৈর্ঘ্যের অবতল লেন্স (Concave Lens) যুক্ত চশমা ব্যবহার করা।

    ১১. আলোর বিক্ষেপণ সংক্রান্ত র‍্যালের সূত্রটি লেখো এবং লাল আলোর বিপদ সংকেত হিসেবে ব্যবহারের কারণ দর্শাও।
    উত্তর:
    র‍্যালের সূত্র: বিক্ষিপ্ত আলোর তীব্রতা ($I$) তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ($\lambda$) চতুর্থ ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক।
    অর্থাৎ, $I \propto \frac{1}{\lambda^4}$।
    লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, তাই র‍্যালের সূত্রানুযায়ী এর বিক্ষেপণ সবচেয়ে কম হয় এবং এটি কুয়াশা বা ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়। তাই বিপদ সংকেত হিসেবে লাল আলো ব্যবহৃত হয়।

    চলতড়িৎ

    ১২. জুলের তাপীয় ফল সংক্রান্ত সূত্রগুলি লেখো।
    উত্তর:
    ১) প্রবাহমাত্রার সূত্র: $H \propto I^2$ (যখন R ও t স্থির)।
    ২) রোধের সূত্র: $H \propto R$ (যখন I ও t স্থির)।
    ৩) সময়ের সূত্র: $H \propto t$ (যখন I ও R স্থির)।
    গাণিতিক রূপ:
    $H = \frac{I^2Rt}{J}$

    ১৩. সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত তিনটি রোধ $R_1$, $R_2$ ও $R_3$-এর তুল্যরোধ $R_p$ নির্ণয় করো।
    উত্তর:
    সমান্তরাল সমবায়ে বিভব প্রভেদ (V) সমান থাকে এবং মূল প্রবাহমাত্রা (I) ভাগ হয়ে যায়।
    $I = I_1 + I_2 + I_3$
    বা, $\frac{V}{R_p} = \frac{V}{R_1} + \frac{V}{R_2} + \frac{V}{R_3}$
    বা, $\frac{1}{R_p} = \frac{1}{R_1} + \frac{1}{R_2} + \frac{1}{R_3}$

    ১৪. ফ্লেমিং-এর বামহস্ত নিয়মটি বিবৃত করো এবং এর ভিত্তিতে বার্লোর চক্রের ঘূর্ণন ব্যাখ্যা করো।
    উত্তর:
    (বামহস্ত নিয়মটি ২ নম্বরের প্রশ্নে দেওয়া আছে)।
    বার্লোর চক্রে তড়িৎবাহী দণ্ড চুম্বকক্ষেত্রের মধ্যে থাকে। ফ্লেমিং-এর বামহস্ত নিয়ম অনুযায়ী তড়িৎপ্রবাহ এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের লম্ব অভিমুখে একটি বল ক্রিয়া করে, যার ফলে চক্রটি ঘুরতে থাকে। প্রবাহের দিক বা চুম্বকের মেরু উল্টে দিলে ঘূর্ণন বিপরীত হয়।

    ১৫. একটি বাড়িতে দুটি ৬০ ওয়াট পাখা এবং দুটি ৪০ ওয়াট বাল্ব দৈনিক ৫ ঘণ্টা করে চলে। প্রতি ইউনিটের দাম ৫ টাকা হলে এক মাসে (৩০ দিন) বিদ্যুতের বিল কত হবে?
    উত্তর:
    মোট ওয়াট = $(2 \times 60) + (2 \times 40)$
    = $120 + 80 = 200$ ওয়াট।
    দৈনিক শক্তি ব্যয় = $200 \times 5 = 1000$ ওয়াট-ঘণ্টা
    = 1 B.O.T ইউনিট।
    ৩০ দিনে মোট ইউনিট = $1 \times 30 = 30$ ইউনিট।
    মোট বিল = $30 \times 5 = 150$ টাকা।

    ১৬. ১ ওহম, ২ ওহম এবং ৩ ওহম রোধগুলিকে কীভাবে যুক্ত করলে তুল্য রোধ 1.5 ওহম হবে? দেখাও।
    উত্তর:
    ৩ ওহম রোধকে আলাদা রেখে, ১ ওহম ও ২ ওহম রোধকে শ্রেণিতে যুক্ত করলে হবে ৩ ওহম।
    এবার এই ৩ ওহমের সাথে সমান্তরালে আগের ৩ ওহম যুক্ত করলে:
    $\frac{1}{R} = \frac{1}{3} + \frac{1}{3} = \frac{2}{3}$
    অতএব,
    $R = \frac{3}{2} = 1.5$ ওহম।
    (অর্থাৎ ১ ও ২ ওহম শ্রেণিতে, তার সাথে ৩ ওহম সমান্তরালে)।

    পরমাণুর নিউক্লিয়াস

    ১৭. নিউক্লিয় সংযোজন ও নিউক্লিয় বিভাজনের মধ্যে তিনটি পার্থক্য লেখো।
    উত্তর:
    ১) বিভাজনে ভারী নিউক্লিয়াস ভেঙে হালকা নিউক্লিয়াস গঠিত হয়, সংযোজনে হালকা নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে।
    ২) বিভাজনে কম তাপমাত্রা প্রয়োজন, সংযোজনে অত্যধিক উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন।
    ৩) সংযোজনে নির্গত শক্তির পরিমাণ বিভাজনের চেয়ে অনেক বেশি।

    ১৮. $\alpha$, $\beta$ এবং $\gamma$ রশ্মির আধান ও ভেদন ক্ষমতার তুলনা করো।
    উত্তর:
    ১) আধান: $\alpha$ ধনাত্মক ($+2$), $\beta$ ঋণাত্মক ($-1$), $\gamma$ নিস্তড়িৎ ($0$)।
    ২) ভেদন ক্ষমতা: $\gamma > \beta > \alpha$।
    (গামার সবচেয়ে বেশি, আলফার সবচেয়ে কম)।

    পর্যায় সারণি ও রাসায়নিক বন্ধন

    ১৯. পর্যায় সারণিতে পর্যায় ও শ্রেণি বরাবর পারমাণবিক ব্যাসার্ধ কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
    উত্তর:
    পর্যায় বরাবর: বামদিক থেকে ডানদিকে গেলে পারমাণবিক ব্যাসার্ধ হ্রাস পায় (কারণ নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ বাড়ে)।
    শ্রেণি বরাবর: উপর থেকে নিচে নামলে পারমাণবিক ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পায় (কারণ নতুন কক্ষপথ যুক্ত হয়)।

    ২০. আয়নন শক্তি বা আয়নাইজেশন পটেনশিয়াল কাকে বলে? শ্রেণি বরাবর এর পরিবর্তন লেখো।
    উত্তর:
    গ্যাসীয় অবস্থায় কোনো মৌলের প্রশম পরমাণুর সর্ববহিস্থ কক্ষ থেকে একটি ইলেকট্রনকে অপসারিত করে এক একক ধনাত্মক আয়নে পরিণত করতে যে ন্যূনতম শক্তির প্রয়োজন হয়, তাকে আয়নন শক্তি বলে।
    শ্রেণি বরাবর উপর থেকে নিচে নামলে আয়নন শক্তি হ্রাস পায়।

    ২১. NaCl একটি আয়নীয় যৌগ কিন্তু $CH_4$ একটি সমযোজী যৌগ—ব্যাখ্যা করো।
    উত্তর:
    NaCl-এ সোডিয়াম ইলেকট্রন বর্জন করে $Na^+$ এবং ক্লোরিন তা গ্রহণ করে $Cl^-$ হয়, এদের মধ্যে স্থির তড়িৎ আকর্ষণে বন্ধন তৈরি হয়। তাই এটি আয়নীয়।
    অন্যদিকে, $CH_4$-এ কার্বন ও হাইড্রোজেন ইলেকট্রন শেয়ার বা ভাগ করে অষ্টক ও দ্বৈত পূর্ণ করে, তাই এটি সমযোজী।

    ২২. ইলেকট্রন ডট গঠন দেখাও: $CO_2$ এবং $C_2H_4$।
    উত্তর:
    ১) $CO_2$: O=C=O (কার্বনের সাথে দুটি অক্সিজেন দ্বি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত)।
    ২) $C_2H_4$: ইথিলিন অণুতে দুটি কার্বনের মধ্যে দ্বি-বন্ধন এবং কার্বন-হাইড্রোজেনের মধ্যে এক-বন্ধন থাকে।
    (চিত্র বই থেকে প্র্যাকটিস করবে)।

    তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

    ২৩. তড়িৎ লেপন কাকে বলে? তামার চামচে রূপার প্রলেপ দিতে ক্যাথোড, অ্যানোড ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য হিসেবে কী কী ব্যবহার করবে?
    উত্তর: (সংজ্ঞা ২ নম্বরে দেওয়া আছে)।
    ক্যাথোড: তামার চামচ।
    অ্যানোড: বিশুদ্ধ রূপার পাত।
    তড়িৎ বিশ্লেষ্য: পটাশিয়াম আর্জেন্টো সায়ানাইড [$K[Ag(CN)_2]$] দ্রবণ।

    ২৪. প্লাটিনাম তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে অম্লায়িত জলের তড়িৎ বিশ্লেষণে ক্যাথোড ও অ্যানোডে সংঘটিত বিক্রিয়াগুলি লেখো।
    উত্তর:
    বিয়োজন:
    $H_2O \rightleftharpoons H^+ + OH^-$
    ক্যাথোড বিক্রিয়া:
    $H^+ + e^- \rightarrow H$
    $H + H \rightarrow H_2 \uparrow$ (হাইড্রোজেন গ্যাস)।
    অ্যানোড বিক্রিয়া:
    $4OH^- - 4e^- \rightarrow 2H_2O + O_2 \uparrow$ (অক্সিজেন গ্যাস)।

    পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্প

    ২৫. হেবার পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া প্রস্তুতির নীতি ও শর্ত লেখো।
    উত্তর:
    নীতি: ১ ভাগ নাইট্রোজেন ও ৩ ভাগ হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রত্যক্ষ সংযোগে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।
    সমীকরণ:
    $N_2 + 3H_2 \rightleftharpoons 2NH_3$ + তাপ।
    শর্ত: ২০০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, প্রায় ৫৫০°C উষ্ণতা এবং অনুঘটক হিসেবে আয়রন চূর্ণ ও উদ্দীপক হিসেবে $Mo$ বা $Al_2O_3$ ব্যবহার করা হয়।

    ২৬. স্পর্শ পদ্ধতিতে সালফিউরিক অ্যাসিড প্রস্তুতির ধাপগুলি সমীকরণসহ লেখো।
    উত্তর:
    ১) সালফার বা আয়রন পাইরাইটিস পুড়িয়ে $SO_2$ তৈরি।
    $S + O_2 \rightarrow SO_2$
    ২) $V_2O_5$ অনুঘটকের উপস্থিতিতে $SO_2$-কে জারিত করে $SO_3$ তৈরি।
    $2SO_2 + O_2 \rightleftharpoons 2SO_3$
    ৩) $SO_3$-কে ৯৮% $H_2SO_4$-এ শোষণ করে ওলিয়াম ($H_2S_2O_7$) তৈরি।
    ৪) ওলিয়ামের সাথে পরিমাণমতো জল মিশিয়ে $H_2SO_4$ তৈরি।

    ২৭. পরীক্ষাগারে $NH_3$ গ্যাস প্রস্তুতির নীতি লেখো এবং গ্যাসটি কীভাবে সংগ্রহ করা হয়?
    উত্তর:
    নীতি: অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও শুষ্ক কলিচুন ($Ca(OH)_2$) মিশিয়ে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হয়।
    সমীকরণ:
    $2NH_4Cl + Ca(OH)_2 \rightarrow$$\\$$ CaCl_2 + 2H_2O + 2NH_3 \uparrow$
    সংগ্রহ: বায়ু অপেক্ষা হালকা হওয়ায় বায়ুর নিম্ন অপসারণ দ্বারা গ্যাস জারে সংগ্রহ করা হয়।

    ২৮. লাইকার অ্যামোনিয়া ও তরল অ্যামোনিয়ার মধ্যে পার্থক্য কী?
    উত্তর:
    লাইকার অ্যামোনিয়া হলো উচ্চচাপে জলে দ্রবীভূত ৩৫% গাঢ় অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ (ক্ষারীয়)।
    তরল অ্যামোনিয়া হলো গ্যাসীয় অ্যামোনিয়াকে উচ্চচাপে ও নিম্ন তাপমাত্রায় তরলে পরিণত করা অবস্থা (জল থাকে না)।

    ২৯. কিপ যন্ত্রে প্রস্তুত করা যায় এমন একটি গ্যাসের নাম লেখো। গ্যাসটি প্রস্তুতির বিক্রিয়াটি লেখো।
    উত্তর:
    গ্যাস: হাইড্রোজেন সালফাইড ($H_2S$)।
    বিক্রিয়া:
    $FeS + H_2SO_4 \rightarrow FeSO_4 + H_2S \uparrow$

    ধাতুবিদ্যা

    ৩০. মরিচা পড়া বা জারণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় লেখো।
    উত্তর:
    ১) লোহার ওপর আলকাতরা বা রঙের প্রলেপ দেওয়া।
    ২) লোহার ওপর জিংকের প্রলেপ বা গ্যালভানাইজেশন করা।
    ৩) লোহাকে অন্য ধাতুর সাথে মিশিয়ে সংকর ধাতু (যেমন স্টেইনলেস স্টিল) তৈরি করা।

    ৩১. থার্মিট মিশ্রণ কী? এই পদ্ধতির ব্যবহার লেখো।
    উত্তর:
    ৩ ভাগ ওজনের ফেরিক অক্সাইড ($Fe_2O_3$) এবং ১ ভাগ ওজনের অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণের মিশ্রণকে থার্মিট মিশ্রণ বলে।
    ব্যবহার: রেললাইনের ফাটল বা ভাঙা যন্ত্রাংশ জোড়া দিতে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

    ৩২. কপার ও অ্যালুমিনিয়ামের একটি করে আকরিকের নাম ও সংকেত লেখো।
    উত্তর:
    কপার: কপার গ্লান্স ($Cu_2S$) বা কপার পাইরাইটিস ($CuFeS_2$)।
    অ্যালুমিনিয়াম: বক্সাইট ($Al_2O_3, 2H_2O$)।

    জৈব রসায়ন

    ৩৩. ইথিলিনের সাথে হাইড্রোজেনের সংযোজন বিক্রিয়াটি (শর্তসহ) লেখো।
    উত্তর:
    সাধারণ চাপে ও নিকেল (Ni) বা প্যালাডিয়াম অনুঘটকের উপস্থিতিতে ২৫০°C উষ্ণতায় ইথিলিন ($C_2H_4$) হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়ে ইথেন ($C_2H_6$) উৎপন্ন করে।
    সমীকরণ:
    $H_2C=CH_2 + H_2 \rightarrow H_3C-CH_3$

    ৩৪. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের সাথে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।
    উত্তর:
    অ্যাসিটিক অ্যাসিডের জলীয় দ্রবণে সোডিয়াম বাইকার্বনেট ($NaHCO_3$) যোগ করলে সোডিয়াম অ্যাসিটেট লবণ, জল এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয় যা বুদবুদ আকারে বের হয়।
    সমীকরণ:
    $CH_3COOH + NaHCO_3 \rightarrow$
    $CH_3COONa + H_2O + CO_2 \uparrow$

    ৩৫. মিথেনের প্রতিস্থাপন বিক্রিয়াটি (প্রথম ধাপ) লেখো।
    উত্তর:
    বিক্ষিপ্ত সূর্যালোকে মিথেন ক্লোরিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে মিথাইল ক্লোরাইড ($CH_3Cl$) ও হাইড্রোজেন ক্লোরাইড উৎপন্ন করে।
    সমীকরণ:
    $CH_4 + Cl_2 \rightarrow CH_3Cl + HCl$

    ৩৬. IUPAC নাম লেখো:
    (i) $CH_3CH_2CHO$ - প্রোপান্যাল
    (ii) $CH_3COCH_3$ - প্রোপানোন
    (iii) $CH_3CH_2OH$ - ইথানল

    ৩৭. ডিনেচার্ড স্পিরিট কী? এর একটি ব্যবহার লেখো।
    উত্তর: (২ নম্বরের প্রশ্নে সংজ্ঞা দেওয়া আছে)।
    ব্যবহার: এটি বার্নিশ শিল্পে দ্রাবক হিসেবে এবং স্পিরিট ল্যাম্পের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

    ৩৮. ইথাইল অ্যালকোহলের নিরুদন বিক্রিয়াটি লেখো।
    উত্তর:
    গাঢ় $H_2SO_4$-এর উপস্থিতিতে ১৭০°C উষ্ণতায় ইথানল থেকে এক অণু জল অপসারিত হয়ে ইথিলিন উৎপন্ন হয়।
    সমীকরণ:
    $CH_3CH_2OH \xrightarrow[170^\circ C]{conc. H_2SO_4}$$\\$$ CH_2=CH_2 + H_2O$

    অতিরিক্ত গাণিতিক ও ধারণামূলক প্রশ্ন

    ৩৯. কোনো বস্তুর ভর $m$, আপেক্ষিক তাপ $s$ এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি $t$ হলে, গৃহিত তাপের রাশিমালাটি কী? ক্যালোরিমিতির মূলনীতিটি লেখো।
    উত্তর:
    গৃহিত তাপ, $H = mst$।
    মূলনীতি: তাপের আদান-প্রদানের সময় রাসায়নিক বিক্রিয়া না ঘটলে,
    উষ্ণ বস্তু কর্তৃক বর্জিত তাপ = শীতল বস্তু কর্তৃক গৃহিত তাপ।

    ৪০. ওহমের সূত্র থেকে রোধের সংজ্ঞা দাও। ১ ওহম বলতে কী বোঝো?
    উত্তর:
    ওহমের সূত্রানুযায়ী $V = IR$ বা $R = V/I$। অর্থাৎ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদ ও প্রবাহমাত্রার অনুপাতই হলো রোধ।
    ১ ওহম: কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব প্রভেদ ১ ভোল্ট হলে যদি তার মধ্য দিয়ে ১ অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহিত হয়, তবে ওই পরিবাহীর রোধকে ১ ওহম বলে।

    ৪১. 'CFC' কীভাবে ওজোন স্তর ধ্বংস করে? বিক্রিয়াসহ লেখো।
    উত্তর:
    অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে CFC ভেঙে সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু ($Cl$) তৈরি করে।
    $CFCl_3 \rightarrow CFCl_2 + Cl$
    এই সক্রিয় ক্লোরিন ওজোন ($O_3$) অণুর সাথে বিক্রিয়া করে অক্সিজেন ($O_2$) ও ক্লোরিন মনোক্সাইড ($ClO$) তৈরি করে ওজোন স্তর ধ্বংস করে।
    $Cl + O_3 \rightarrow ClO + O_2$

    ৪২. ১ মোল নাইট্রোজেন এবং ১ মোল অ্যামোনিয়ার মধ্যে কোনটিতে পরমাণুর সংখ্যা বেশি এবং কেন?
    উত্তর:
    ১ মোল নাইট্রোজেন ($N_2$) = $6.022 \times 10^{23}$ টি অণু।
    ১টি $N_2$ অণুতে ২টি পরমাণু থাকে। মোট পরমাণু = $2 \times N_A$।
    ১ মোল অ্যামোনিয়া ($NH_3$) = $6.022 \times 10^{23}$ টি অণু।
    ১টি $NH_3$ অণুতে (১টি N + ৩টি H) = ৪টি পরমাণু থাকে। মোট পরমাণু = $4 \times N_A$।
    অতএব, অ্যামোনিয়াতে পরমাণুর সংখ্যা বেশি।

    ৪৩. $STP$-তে 11.2 লিটার $CO_2$ গ্যাস পেতে হলে কত গ্রাম ক্যালশিয়াম কার্বনেটকে ($CaCO_3$) লঘু $HCl$-এর সাথে বিক্রিয়া করাতে হবে? ($Ca=40, C=12, O=16$)
    উত্তর:
    বিক্রিয়া: $CaCO_3 + 2HCl \rightarrow$$\\$$ CaCl_2 + H_2O + CO_2$
    $CaCO_3$-এর আণবিক ভর
    = $40+12+(16 \times 3) = 100$ g।
    STP-তে 22.4 L $CO_2$ পাওয়া যায় 100 g $CaCO_3$ থেকে।
    অতএব, 11.2 L $CO_2$ পাওয়া যাবে 50 g $CaCO_3$ থেকে।

    ৪৪. উত্তল লেন্সকে অভিসারী এবং অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলা হয় কেন?
    উত্তর:
    উত্তল লেন্স সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছকে প্রতিসরণের পর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত করে (অভিসারী করে), তাই একে অভিসারী লেন্স বলে।
    অবতল লেন্স সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছকে প্রতিসরণের পর ছড়িয়ে দেয় (অপসারী করে), মনে হয় যেন কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে, তাই একে অপসারী লেন্স বলে।

    ৪৫. তড়িৎ চুম্বক কী? এর শক্তি কীভাবে বাড়ানো যায়?
    উত্তর:
    কাঁচা লোহার মজ্জার ওপর অন্তরিত তার জড়িয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে সেটি চুম্বকে পরিণত হয়, একে তড়িৎ চুম্বক বলে।
    শক্তি বাড়ানোর উপায়:
    ১) তারের পাক সংখ্যা বাড়িয়ে।
    ২) তড়িৎ প্রবাহমাত্রা বাড়িয়ে।

    ৪৬. $A, B, C$ মৌলগুলির পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে 6, 8, 11।
    (i) কোনটি ধাতু ও কোনটি অধাতু?
    (ii) B ও C দ্বারা গঠিত যৌগের সংকেত কী হবে?

    উত্তর:
    (i) A(6) = C (কার্বন-অধাতু), B(8) = O (অক্সিজেন-অধাতু), C(11) = Na (সোডিয়াম-ধাতু)।
    (ii) C (ধাতু) একটি ইলেকট্রন বর্জন করে $C^+$ হবে এবং B (অধাতু) দুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে $B^{2-}$ হবে। তাই সংকেত হবে $C_2B$ (অর্থাৎ $Na_2O$)।

    ৪৭. লোহার মরিচা পড়া রোধে ক্যাথোডীয় রক্ষণ পদ্ধতিটি কী?
    উত্তর:
    ভূগর্ভস্থ লোহার পাইপ বা তেলের ট্যাঙ্কের সাথে তার দিয়ে ম্যাগনেসিয়াম ব্লক যুক্ত করে রাখা হয়। এখানে লোহা ক্যাথোড এবং ম্যাগনেসিয়াম অ্যানোড হিসেবে কাজ করে। ফলে ম্যাগনেসিয়াম ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কিন্তু লোহা সুরক্ষিত থাকে।

    ৪৮. জৈব ভঙ্গুর ও জৈব অভঙ্গুর পলিমারের পার্থক্য ও উদাহরণ দাও।
    উত্তর:
    জৈব ভঙ্গুর: জীবাণু দ্বারা বিয়োজিত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। যেমন: সেলুলোজ, প্রোটিন।
    জৈব অভঙ্গুর: জীবাণু দ্বারা বিয়োজিত হয় না, পরিবেশ দূষণ করে। যেমন: পলিথিন, PVC।

    ৪৯. পরিপূরক বর্ণ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
    উত্তর:
    যে দুটি বর্ণের আলো নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশলে সাদা আলো তৈরি হয়, তাদের একে অপরের পরিপূরক বর্ণ বলে। যেমন: হলুদ ও নীল পরস্পর পরিপূরক বর্ণ।

    ৫০. দুটি তারের দৈর্ঘ্য, ব্যাস এবং রোধাঙ্ক প্রতিটির অনুপাত 1:2 হলে, তাদের রোধের অনুপাত কত হবে?
    উত্তর:
    আমরা জানি,
    $R \propto \frac{\rho L}{A}$ বা $R \propto \frac{\rho L}{d^2}$ (যেহেতু $A \propto d^2$)।
    সুতরাং,
    $\frac{R_1}{R_2} = \frac{\rho_1}{\rho_2} \times \frac{L_1}{L_2} \times (\frac{d_2}{d_1})^2$
    মান বসিয়ে পাই:
    $= \frac{1}{2} \times \frac{1}{2} \times (\frac{2}{1})^2$
    $= \frac{1}{4} \times 4$
    $= 1:1$
    উত্তর: রোধের অনুপাত 1:1।

    Post a Comment (0)
    Previous Post Next Post

    My Favorites ❤️

    See your favorite posts by clicking the love icon at the top ❤️
    Join our WhatsApp channel 👉🏻 Click here
    ⚠️
    AdBlocker Detected
    We noticed that you are using an AdBlocker.

    Our website is free to use, but we need ads to cover our server costs. Please disable your AdBlocker and reload the page to continue reading.