বিক্রিয়ার ক্রম ও আণবিকতার পার্থক্য

Welcome to Bigyanbook

নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো বিক্রিয়ার ক্রম ও আণবিকতার পার্থক্য। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।



প্রথমে আমরা এই বিক্রিয়ার ক্রম এবং বিক্রিয়ার আণবিকতা কি সেই সম্পর্কে একটু জেনে নেবো।

বিক্রিয়ার ক্রম কী?

উত্তর: কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার পরীক্ষা লব্ধ বিক্রিয়া-হার সমীকরণে কোনো বিক্রিয়কের গাঢ়ত্ব রাশির ঘাত হলো ওই বিক্রিয়কের সাপেক্ষে বিক্রিয়াটির ক্রম এবং বিক্রিয়া-হার সমীকরণে সকল গাঢ়ত্ব রাশির ঘাত সমূহের সমষ্টিকে উক্ত বিক্রিয়ার ক্রম বলে বা সামগ্রিক ক্রম বলে।

যদি কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিক্রিয়া ক্রম (n) = 1 হয় তাহলে ওই বিক্রিয়াটি প্রথম ক্রমের বিক্রিয়া হবে। একই রকম ভাবে, বিক্রিয়া ক্রম (n) = 2 হলে বিক্রিয়াটি দ্বিতীয় ক্রমের বিক্রিয়া হবে। আবার, বিক্রিয়া ক্রম (n) = 3 হলে বিক্রিয়াটি তৃতীয় ক্রমের বিক্রিয়া হবে।


বিক্রিয়ার আণবিকতা কী?

উত্তর: কোনো মৌলিক বিক্রিয়া সংঘটিত হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন যতগুলি বিক্রিয়ক অণু, পরমাণু, মুক্ত মূলক বা আয়নের প্রয়োজন হয়, সেই সংখ্যাকে উক্ত মৌলিক বিক্রিয়াটির আণবিকতা বলে।


এক আণবিক বিক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর: যে মৌলিক বিক্রিয়ায় কেবল একটি কণা (অণু, পরমাণু, মুক্ত মূলক বা আয়ন) অংশ গ্রহণ করে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে, তাকে এক আণবিক বিক্রিয়া বলে।

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বিক্রিয়ার আণবিকতা = 1


দ্বি-আণবিক বিক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর: যে মৌলিক বিক্রিয়ায় দুটি কণা (অণু, পরমাণু, মুক্ত মূলক বা আয়ন) অংশগ্রহণ করে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে দ্বি আণবিক বিক্রিয়া বলে।

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বিক্রিয়ার আণবিকতা = 2


ত্রি-আণবিক বিক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর: যে মৌলিক বিক্রিয়ায় তিনটি কণা (অণু, পরমাণু, মুক্ত মূলক বা আয়ন) অংশ গ্রহণ করে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে ত্রি আণবিক বিক্রিয়া বলে।

অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বিক্রিয়ার আণবিকতা = 3


মৌলিক বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে, বিক্রিয়ার আণবিকতা = বিক্রিয়ার ক্রম। মৌলিক বিক্রিয়ার ক্রম, বিক্রিয়ার আণবিকতা থেকে নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ কোন একটি মৌলিক বিক্রিয়া এক আণবিক হলে সেটি প্রথম ক্রমের হয়ে থাকে, একইভাবে দুই আণবিক হলে সেটি দ্বিতীয় ক্রমের হয়ে থাকে।


বিক্রিয়ার ক্রম ও আণবিকতার পার্থক্য

বিক্রিয়ার ক্রমবিক্রিয়ার আণবিকতা
1. কোনো বিক্রিয়ার পরীক্ষালব্ধ বিক্রিয়া-হার সমীকরণে উপস্থিত গাঢ়ত্ব রাশিগুলির ঘাতের সমষ্টি হল বিক্রিয়াটির ক্রম।1. মৌলিক বিক্রিয়ায় সর্বনিম্ন যতগুলি অণু, পরমাণু, মুক্ত মূলক বা আয়ন অংশগ্রহণ করে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে, তা হলো মৌলিক বিক্রিয়াটির আণবিকতা।
2. বিক্রিয়াক্রম পরীক্ষালব্ধ রাশি। এর সঙ্গে বিক্রিয়ার সমতাযুক্ত সমীকরণে বিক্রিয়কগুলির সহগ বা অনুসংখ্যার সম্পর্ক নেই।2. আণবিকতা তাত্ত্বিক রাশি। এর মান মৌলিক বিক্রিয়ার শমিত সমীকরণে উপস্থিত বিক্রিয়ক কণাগুলির সহগ বা কণা সংখ্যার যোগফলের সমান।
3. বিক্রিয়াক্রমের মান পূর্ণ সংখ্যা, শূন্য অথবা ভগ্নাংশ হতে পারে।3. আণবিকতা সর্বদা পূর্ণ সংখ্যা হয়। এর মান কখনোই শূন্য বা ভগ্নাংশ হয় না।
4. জটিল বিক্রিয়ার ক্রম হলো তার সামগ্রিক বিক্রিয়াক্রম। এর মান সবচেয়ে ধীর গতি সম্পন্ন ধাপ এর উপর নির্ভরশীল।4. জটিল বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সামগ্রিক বিক্রিয়ার কোন আণবিকতা নেই। কিন্তু এ ধরনের বিক্রিয়া যেসব মৌলিক বিক্রিয়ার সমন্বয়ে গঠিত তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব আণবিকতা আছে।
5. উষ্ণতা, বিক্রিয়কের গাঢ়ত্ব বা চাপ পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো বিক্রিয়ার ক্রম পরিবর্তন করা যায়।5. উষ্ণতা, বিক্রিয়কের গাঢ়ত্ব বা চাপ পরিবর্তনের মাধ্যমে আণবিকতা পরিবর্তন করা যায় না। কারণ, কোন নির্দিষ্ট বিক্রিয়ার আণবিকতা সর্বদা স্থির থাকে।



কেমন লাগছে আপনার বিজ্ঞানবুক পড়তে অবশ্যই জানান আমাদেরকে নীচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে। যদি এখনো আপনি আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব না করে থাকেন তাহলে এখনি সাবস্ক্রাইব করে দিন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল। এই লেখাটি পড়ে যদি ভালো লাগে উপকার হয় তাহলে অবশ্যই অন্যান্যদের সঙ্গে একটু শেয়ার করে দিন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post