নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞানবুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো আলোক দশা ও অন্ধকার দশার পার্থক্য। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক পার্থক্যগুলি।

বিজ্ঞানী ব্ল্যাকম্যান (Blackman), 1905 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম সালোকসংশ্লেষের সামগ্ৰিক পদ্ধতিটিকে দুটি পৃথক পদ্ধতিতে ভাগ করেন। প্রথমটি আলোক নির্ভর বলে একে আলোক দশা (light phase) বা আলোক বিক্রিয়া (light reaction) বলে। এবং দ্বিতীয়টি, আলোক নিরপেক্ষ বলে একে অন্ধকার দশা (dark phase) বা অন্ধকার বিক্রিয়া (dark reaction) বা ব্ল্যাকম্যানের বিক্রিয়া (Blackman's reaction) বলে।
আলোক দশা কাকে বলে ?
আলোক দশা হল সালোকসংশ্লেষের প্রথম পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে আলো গ্রহণ করা হয় এবং তার ব্যবহার করে ATP ও NADPH উৎপাদন করা হয়।
অন্ধকার দশা কাকে বলে ?
ক্লোরোপ্লাস্ট -এর মধ্যে স্টোমাতে যে আলোক নিরপেক্ষ সালোকসংশ্লেষ ঘটে তাকে অন্ধকার দশা বলে। এটি বায়োসিন্থেটিক দশা নামেও পরিচিত।
আলোক দশা ও অন্ধকার দশার মধ্যে পার্থক্য
পার্থক্যের বিষয়: (১) পর্যায়, (২) স্থান, (৩) বিক্রিয়ার প্রকৃতি, (৪) গ্রাহী বস্তু, (৫) অক্সিজেন উৎপাদন, (৬) সংশ্লেষ প্রক্রিয়া, (৭) আলোক নির্ভরতা, (৮) জারণ ও বিজারণ, (৯) বিশোষণ, (১০) নির্ভরশীলতা।
আলোক দশা | অন্ধকার দশা |
---|---|
১) আলোক দশা হলো সালোকসংশ্লেষের প্রথম পর্যায়ের প্রক্রিয়া। | ১) অন্ধকার দশা সালোকসংশ্লেষের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রক্রিয়া। |
২) আলোক দশা প্লাস্টিডের গ্ৰানায় সম্পন্ন হয়। | ২) অন্ধকার দশা ক্লোরোপ্লাস্ট -এর স্ট্রোমায় সম্পন্ন হয়। |
৩) এটি হলো ভৌত প্রক্রিয়া এবং এটি অত্যন্ত দ্রুত সম্পন্ন হয়। | ৩) এটি জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং এটি অপেক্ষাকৃত ধীরে ঘটে। |
৪) ক্লোরোফিল আলোকগ্ৰাহী বস্তু। | ৪) RuBP বাতাসের CO2 গ্ৰহণ করে। |
৫) আলোক দশায় হিল বিক্রিয়া বা ফোটোলাইসিসের মাধ্যমে অক্সিজেন উৎপাদিত হয়। | ৫) অন্ধকার দশায় অক্সিজেন উৎপাদন হয় না। |
৬) আলোক দশাতে ATP এবং NADPH + H+ সংশ্লেষিত হয়। | ৬) অন্ধকার দশাতে গ্লুকোজ ও অন্যান্য শর্করা সংশ্লেষিত হয়। |
৭) সূর্যালোকের ফোটন কণার শোষণ একান্ত আবশ্যক। | ৭) আলোক নিরপেক্ষ দশা। |
৮) NADP বিজারিত হয়। | ৮) NADP + H+ জারিত হয়। |
৯) সূর্যালোক শোষিত হয়। | ৯) বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষিত হয়। |
১০) আলোক দশা, অন্ধকার দশার উপর নির্ভরশীল নয়। | ১০) আলোক দশায় উৎপন্ন NADPH + H+ এবং ATP এর উপর অন্ধকার দশা নির্ভরশীল। |