নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
![]() |
ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য |
ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য
1) ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের প্রধান উদ্ভিদ দেহ রেনুধর প্রকৃতির হয় এবং উদ্ভিদেহ মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভেদিত থাকে। ব্যক্তজীবী উদ্ভিদগুলি সাধারণত বহুবর্ষজীবী বৃক্ষজাতীয় হয়। এর কোনো কোনো প্রজাতি বীরুৎ গুল্ম জাতীয় হতে পারে।
2) রেনুধর উদ্ভিদ এর মূল সাধারণত প্রধান মূল তন্ত্র গঠন করে। মূলে মাইকোরাইজা ছত্রাকের সংক্রমণ দেখতে পাওয়া যায়। এই ধরনের মূলকে মাইকোরাইজাল মূল বলে। কোনো কোনো উদ্ভিদের মূলে শৈবালের সংক্রমণ ঘটে কোরালয়েড জাতীয় মূল উৎপাদন করে।
3) ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের কান্ড বায়বীয়, খাড়া, শাখাযুক্ত বা শাখাবিহীন প্রকৃতির হতে পারে।
4) ব্যক্তবীজী উদ্ভিদে মাইক্রোফাইলাস অথবা মেগাফাইলাস প্রকৃতির পাতা দেখা যায়। পাতাগুলি সরল অথবা যৌগিক প্রকৃতির হতে পারে। পাতার আকার, আকৃতিগত বৈচিত্র্য গণ কিংবা প্রজাতিভেদে লক্ষ্য করা যায়। পাতার শিরাবিন্যাস গণ ও প্রজাতি ভেদে সমান্তরাল জালিকাকার প্রভৃতি প্রকারের হতে পারে। অপরিণত অবস্থায় পাতায় সারসিনেট প্রকৃতির মুকুল পত্রবিন্যাস দেখা যায়। ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের পাতাগুলি চিরসবুজ এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাতায় রেজিন প্যাসেজ উপস্থিত থাকে। নিটেলিস বর্গে রেজিন প্যাসেজ এর পরিবর্তে তরুক্ষীর নালী উপস্থিত থাকে। অঙ্গসংস্থানিক গঠন বৈচিত্র্যের দিক থেকে পাতার ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাতায় নিমজ্জিত পত্ররন্ধ্র উপস্থিত থাকে।
5) ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের কান্ডের গৌণ কাষ্ঠ ম্যানোজাইলিক অথবা পিকনোজাইলিক প্রকৃতির হতে পারে। ম্যানোজাইলিক প্রকৃতির কাষ্ঠে চওড়া মেডুলারি রশ্মি দেখা যায়। এই ধরনের কাষ্ঠ ছিদ্রাল, নরম এবং অধিক প্যারেনকাইমা যুক্ত হওয়ায় অর্থনৈতিক দিক থেকে এটি কম গুরুত্বপূর্ণ। পিকনোজাইলিক কাষ্ঠ খুব দৃঢ় প্রকৃতির, কম প্যারেনকাইমা যুক্ত এবং মেডুলারি রশ্মি কম চওড়া। এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অধিক। কান্ডের জাইলেমে ট্রাকিয়া বা ভেসল্ অনুপস্থিত এবং ফ্লোয়েমে সঙ্গীকোষ থাকে না।
6) জিমনোস্পার্ম বিষমরেণুপ্রসু বা হেটারোস্পোরাস প্রকৃতির হয় অর্থাৎ এরা ক্ষুদ্রাকার মাইক্রোস্পোর এবং বৃহদাকার মেগাস্পোর উৎপন্ন করে। রেনু গুলি রেনু ধারক এর মধ্যে গঠিত হয় এবং প্রতিটি রেণুধারক রেণুপত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে। রেনু পত্রগুলি একত্রিত অবস্থায় থেকে রেনুপত্রমঞ্জরি গঠন করে। মাইক্রোস্পোর ও মেগাস্পোর অঙ্কুরিত হয়ে যথাক্রমে পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গধর উদ্ভিদ গঠন করে।
7) ব্যক্তবীজী উদ্ভিদে ডিম্বক উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে। ডিম্বক মেগাস্পোরোফিল এর সাথে সংযুক্ত থাকে। মেগাস্পোরোফিল গুলি রেনুপত্রমঞ্জরীর কেন্দ্রীয় অক্ষকে বেষ্টন করে সর্পিলাকারে সজ্জিত থাকে। ডিমবোগুলি সাধারণত বৃন্তহীন, বৃহদাকার হয়। প্রতিটি ডিম্বক নিউসেলাস, ইনটেগুমেন্ট এ একটি কেন্দ্রীয় মেগাস্পোর মাতৃকোশ দ্বারা গঠিত।
8) মেগাস্পোর মাতৃকোষ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে রৈখিক ভাবে বিন্যস্ত চারটি মেগাস্পোর গঠন করে, এই চারটি মেগাস্পোর এর মধ্যে উপরের তিনটি নষ্ট হয়ে যায় এবং কেবল নিচেরটি আকারে বড় হয়ে ভ্রুণস্থলী গঠন করে। অর্থাৎ স্ত্রীলিঙ্গধর উদ্ভিদ সাধারণত মনোস্পোরিক প্রকৃতির হয়।
9) স্ত্রীলিঙ্গ ধর উদ্ভিদে স্ত্রীধানী বা আর্কিগোনিয়াম গঠিত হয়। স্ত্রীধানী গ্ৰীবা, অঙ্কীয়নালিকোশ এবং ডিম্বক দ্বারা গঠিত। ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের কোনো গ্ৰীবানালিকোশ থাকে না।
10) মাইক্রোস্পোর পুংলিঙ্গধর উদ্ভিদ এর প্রথম কোষ। মাইক্রোস্পোর এর প্রাচীরের বাইরের স্তর কে এক্সাইন এবং ভিতরের স্তরকে ইনটাইন বলে।
মনোজাইলিক কাষ্ঠ কাকে বলে ?
যে সকল গৌণ কাষ্ঠে একটিমাত্র স্থায়ী ক্যাম্বিয়াম স্তর উপস্থিত থাকে তাদের মনোজাইলিক কাষ্ঠ বলে।
পলিজাইলিক কাষ্ঠ কাকে বলে ?
যে সকল কাষ্ঠে ক্যাম্বিয়াম একাধিক স্তরে উপস্থিত থাকে সেই সকল গৌণ কাষ্ঠ কে পলিজাইলিক কাষ্ঠ বলে।
ক্লিভেজ পলিএমব্রায়োনি কাকে বলে ?
কনিফার জাতীয় উদ্ভিদের ক্ষেত্রে অপরিণত ভ্রূণের চারটি কোষ একে অপরের থেকে পৃথক হয় এবং প্রতিটি কোষ থেকে পৃথকভাবে ভ্রূণ গঠিত হয়, এই ঘটনাকে ক্লিভেজ পলিএমব্রায়োনি বলে।
সাইফোনোগ্যামি কাকে বলে ?
পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয় পরাগনালি গঠন করে যার মধ্য দিয়ে গ্যামেট অগ্রসর হয়ে ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে, এই ধরনের পরাগযোগকে সাইফোনোগ্যামি বলে।
কেমন লাগছে বিজ্ঞানবুক পড়তে? অবশ্যই জানান কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে। আপনি কি Bigyanbook এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি ইউটিউবে গিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন বিজ্ঞানবুক এর ইউটিউব চ্যানেল। ফলো করুন বিজ্ঞানবুক -কে ফেসবুকে। শেয়ার করুন এই আর্টিকেলটি অন্যান্যদের সাথে। পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক। ধন্যবাদ।।