Contents
মাধ্যমিক ২০২৬ জীবনবিজ্ঞান ২ নম্বরের সাজেশন
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, Bigyanbook-এ তোমাদের স্বাগত। ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে জীবনবিজ্ঞানের ৫টি অধ্যায় থেকে বাছাই করা ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর এখানে দেওয়া হলো। এই প্রশ্নগুলো ভালোভাবে অভ্যাস করলে পরীক্ষায় কমন পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
অধ্যায় ১: জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমম্বয়
১. চলন ও গমন বলতে কী বোঝো?
উঃ যে প্রক্রিয়ায় জীব নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থেকে উদ্দীপকের প্রভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করে, তাকে চলন বলে। আর যে প্রক্রিয়ায় জীব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বলে।
২. ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলনের দুটি পার্থক্য লেখো।
উঃ (১) ট্রপিক চলন উদ্দীপকের উৎসের গতিপথ অনুসারে হয়, কিন্তু ন্যাস্টিক চলন উদ্দীপকের তীব্রতা অনুসারে হয়। (২) ট্রপিক চলন অক্সিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, ন্যাস্টিক চলন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না।
৩. কৃষিকার্যে কৃত্রিম উদ্ভিদ হরমোনের দুটি প্রয়োগ লেখো।
উঃ (১) শাখা কলম থেকে নতুন চারাগাছ সৃষ্টিতে কৃত্রিম অক্সিন (IBA, NAA) ব্যবহার করা হয়। (২) বীজহীন ফল উৎপাদনে (পার্থেনোকার্পি) কৃত্রিম অক্সিন ব্যবহার করা হয়।
৪. মাছের গমনে মায়োটোম পেশীর ভূমিকা কী?
উঃ মাছের মেরুদণ্ডের দুপাশে 'V' আকৃতির মায়োটোম পেশী থাকে। এই পেশীগুলির সংকোচন ও প্রসারণের ফলে মাছের দেহের অগ্রভাগ ও পশ্চাৎভাগ আন্দোলিত হয়, যা মাছকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
৫. সাইন্যাপস বা স্নায়ুসন্নিধি কী? এর কাজ কী?
উঃ দুটি নিউরোনের সংযোগস্থল, যেখানে একটি নিউরোনের অ্যাক্সন শেষ হয় এবং অপর নিউরোনের ডেনড্রন বা কোশদেহ শুরু হয়, তাকে সাইন্যাপস বলে। এর কাজ হলো এক নিউরোন থেকে উদ্দীপনা অপর নিউরোনে বহন করা।
৬. ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ বলতে কী বোঝো?
উঃ কোনো একটি গ্রন্থির ক্ষরণ যখন অন্য একটি গ্রন্থির ক্ষরণ দ্বারা বা রক্তে উপস্থিত উপাদানের মাত্রা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ বলে। যেমন—TSH-এর ক্ষরণ থাইরক্সিনের মাত্রা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
৭. ইনসুলিন ও গ্লুকাগন হরমোনের বিপরীতধর্মী কাজ উল্লেখ করো।
উঃ ইনসুলিন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় (গ্লাইকোজেনেসিস পদ্ধতিতে)। অপরদিকে, গ্লুকাগন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায় (গ্লাইকোজেনোলাইসিস পদ্ধতিতে)।
৮. প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট সংজ্ঞাবহ উদ্দীপনার প্রভাবে যে স্বতঃস্ফূর্ত, অনৈচ্ছিক এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তাকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। যেমন—চোখে তীব্র আলো পড়লে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৯. ক্যাটারাক্ট বা চোখে ছানি পড়া কী? এর কারণ কী?
উঃ বার্ধক্যজনিত কারণে বা অন্য কোনো কারণে চোখের লেন্স অসচ্ছ বা ঘোলাটে হয়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়, একে ক্যাটারাক্ট বলে। ভিটামিনের অভাব বা ডায়াবেটিস এর কারণ হতে পারে।
১০. পিটুইটারি গ্রন্থিকে 'প্রভু গ্রন্থি' বলা হয় কেন?
উঃ পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিসৃত হরমোনগুলি (যেমন- ACTH, TSH, GTH) দেহের অন্যান্য অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই একে প্রভু গ্রন্থি বা Master Gland বলে।
১১. উদ্ভিদের দুটি ট্রপিক চলনের উদাহরণ দাও।
উঃ (১) ফটোট্রপিক চলন: উদ্ভিদের কাণ্ড আলোর উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায়। (২) জিওট্রপিক চলন: উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের টানে মাটির নিচে প্রবেশ করে।
১২. মেনিনজেস ও CSF এর অবস্থান ও কাজ লেখো।
উঃ মেনিনজেস মস্তিষ্ক ও সুষুষ্মাকাণ্ডকে আবৃত করে রাখে এবং সুরক্ষা দেয়। CSF (সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড) মস্তিষ্কের ভেন্ট্রিকল ও সুষুষ্মাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালীতে থাকে, যা পুষ্টি সরবরাহ করে এবং আঘাত থেকে রক্ষা করে।
১৩. জিব্বেরেলিন হরমোনের দুটি কাজ লেখো।
উঃ (১) খর্বাকার উদ্ভিদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা। (২) বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করা।
১৪. পাখির উড্ডয়ন পেশীগুলির নাম ও কাজ লেখো।
উঃ পেক্টোরালিস মেজর (ডানা নিচে নামায়), পেক্টোরালিস মাইনর (ডানা উপরে তোলে) এবং কোরাকো-ব্রাকিয়ালিস। এগুলি পাখির ওড়ার সময় ডানা সঞ্চালনে সাহায্য করে।
১৫. হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের কাজের একটি সাদৃশ্য ও একটি বৈসাদৃশ্য লেখো।
উঃ সাদৃশ্য: উভয়ই দেহকে সমন্বিত করে এবং যোগাযোগ রক্ষা করে। বৈসাদৃশ্য: হরমোনের ক্রিয়া মন্থর কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী, স্নায়ুর ক্রিয়া দ্রুত কিন্তু ক্ষণস্থায়ী।
অধ্যায় ২: জীবনের প্রবাহমানতা
১৬. ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের আন্তঃসম্পর্ক কী?
উঃ ক্রোমোজোম হলো DNA ও প্রোটিনের কুণ্ডলীকৃত গঠন। জিনের রাসায়নিক রূপ হলো DNA। অর্থাৎ, জিনগুলি DNA-র নির্দিষ্ট অংশ নিয়ে গঠিত এবং এই DNA ক্রোমোজোমে অবস্থান করে।
১৭. ইউক্রোমাটিন ও হেটারোক্রোমাটিনের দুটি পার্থক্য লেখো।
উঃ (১) ইউক্রোমাটিন ইন্টারফেজ দশায় হালকা রং ধারণ করে এবং সক্রিয় থাকে। হেটারোক্রোমাটিন গাঢ় রং ধারণ করে এবং নিষ্ক্রিয় থাকে। (২) ইউক্রোমাটিনে জিনের পরিমাণ বেশি থাকে, হেটারোক্রোমাটিনে কম থাকে।
১৮. মিয়োসিস কোশ বিভাজনকে 'হ্রাস বিভাজন' বলা হয় কেন?
উঃ মিয়োসিস কোশ বিভাজনে মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা অপত্য কোশে অর্ধেক হয়ে যায়। তাই একে হ্রাস বিভাজন বলে। এটি প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখতে সাহায্য করে।
১৯. সাইটোকাইনেসিস না হলে কী ঘটবে?
উঃ নিউক্লিয়াস বিভাজনের (ক্যারিওকাইনেসিস) পর সাইটোকাইনেসিস না হলে একটি কোশেই একাধিক নিউক্লিয়াস তৈরি হবে। উদ্ভিদ কোশে একে সিনোসাইট এবং প্রাণী কোশে সিনসিশিয়াম বলে।
২০. মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ কী?
উঃ যে পদ্ধতিতে উদ্ভিদের কোনো কলা বা কোশ বা অঙ্গকে কর্ষণ দ্রবণে (Culture media) বৃদ্ধি ঘটিয়ে দ্রুত অসংখ্য চারাগাছ সৃষ্টি করা হয়, তাকে মাইক্রোপ্রোপাগেশন বলে।
২১. স্বপরাগযোগ ও ইতর পরাগযোগের একটি করে সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
উঃ স্বপরাগযোগ: সুবিধা- বাহকের প্রয়োজন হয় না। অসুবিধা- নতুন বৈশিষ্ট্য আসে না। ইতর পরাগযোগ: সুবিধা- নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ জন্মায়। অসুবিধা- বাহকের ওপর নির্ভর করতে হয় এবং অপচয় বেশি হয়।
২২. অযৌন জনন ও যৌন জননের দুটি পার্থক্য লেখো।
উঃ (১) অযৌন জননে একটি মাত্র জনিতৃ জীব প্রয়োজন, যৌন জননে দুটি ভিন্ন লিঙ্গের জীব প্রয়োজন। (২) অযৌন জননে মাইটোসিস হয়, যৌন জননে গ্যামেট উৎপাদনের সময় মিয়োসিস হয়।
২৩. জনুক্রম বা Alternation of Generation কী?
উঃ জীবের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়ড (n) দশা এবং ডিপ্লয়ড (2n) দশার পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে জনুক্রম বলে। যেমন- ফার্নের জনুক্রম।
২৪. বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের দুটি শারীরিক পরিবর্তন উল্লেখ করো।
উঃ (১) গোঁফ-দাড়ি গজায় এবং গলার স্বর ভারী হয়। (২) পেশিবহুল দেহ ও কাঁধ চওড়া হয়। শুক্রাশয়ে শুক্রাণু উৎপাদন শুরু হয়।
২৫. বৃদ্ধির দশাগুলি কী কী?
উঃ বৃদ্ধির প্রধান তিনটি দশা হলো: (১) কোশ বিভাজন দশা, (২) কোশ প্রসারণ বা আকার বৃদ্ধি দশা, এবং (৩) কোশ বিভেদন বা পরিণতি দশা।
২৬. দ্বিনিষেক কী?
উঃ সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন প্রক্রিয়ায় দুটি পুংগ্যামেটের একটি ডিম্বাণুকে এবং অপরটি নির্ণীত নিউক্লিয়াসকে নিষিক্ত করে। একই ভ্রূণস্থলীতে দুবার নিষেধ ঘটার এই ঘটনাকে দ্বিনিষেক বলে।
২৭. স্টক ও সিয়ন কী?
উঃ জোড় কলমে যে গাছটির মূল মাটিতে থাকে তাকে স্টক (Stock) এবং যে উন্নত মানের ডালটি স্টকের সাথে জোড়া লাগানো হয় তাকে সিয়ন (Scion) বলে।
২৮. সেন্ট্রোমিয়ারের কাজ কী?
উঃ (১) ক্রোমোজোমের দুটি ক্রোমাটিডকে যুক্ত রাখে। (২) কোশ বিভাজনের সময় বেমতন্তু সেন্ট্রোমিয়ারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্রোমোজোমীয় চলনে সাহায্য করে।
২৯. স্পাইরোগাইরা ও প্ল্যানেরিয়ার জনন পদ্ধতি কী?
উঃ স্পাইরোগাইরা খণ্ডীভবন (Fragmentation) পদ্ধতিতে এবং প্ল্যানেরিয়া পুনরুৎপাদন (Regeneration) পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করে।
৩০. অটোজোম ও সেক্স ক্রোমোজোমের পার্থক্য কী?
উঃ অটোজোম দেহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে (সংখ্যা ৪৪টি), আর সেক্স ক্রোমোজোম লিঙ্গ নির্ধারণ করে (সংখ্যা ২টি)।
অধ্যায় ৩: বংশগতি এবং কয়েকটি জিনগত রোগ
৩১. অ্যালিল (Allele) বা অ্যালিলোমর্ফ কী?
উঃ সমসংস্থ ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট বিন্দুতে (লোকাস) অবস্থিত একই জিনের ভিন্ন ভিন্ন রূপভেদকে অ্যালিল বলে। যেমন- মটর গাছের লম্বা বৈশিষ্ট্যের জন্য 'T' এবং বেটে বৈশিষ্ট্যের জন্য 't' হলো অ্যালিল।
৩২. মেন্ডেল মটর গাছ নির্বাচন করেছিলেন কেন? দুটি কারণ লেখো।
উঃ (১) মটর গাছ দ্রুত বংশবিস্তার করে এবং আয়ুষ্কাল কম। (২) মটর গাছে অনেক বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট বা প্রকটভাবে থাকে।
৩৩. অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলতে কী বোঝো?
উঃ যে বংশগতিতে দুটি বিপরীত বৈশিষ্ট্যের কোনোটিই প্রকট না হয়ে উভয়ের মাঝামাঝি একটি নতুন বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটে, তাকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে। যেমন- সন্ধ্যা মালতী ফুলের লাল ও সাদার সংকরায়ণে গোলাপি ফুল হওয়া।
৩৪. হোমোজাইগাস ও হেটারোজাইগাস জীবের পার্থক্য কী?
উঃ কোনো জীবের সমসংস্থ ক্রোমোজোমে একই প্রকার অ্যালিল থাকলে তাকে হোমোজাইগাস (TT বা tt) বলে। আর ভিন্ন প্রকার অ্যালিল থাকলে তাকে হেটারোজাইগাস (Tt) বলে।
৩৫. লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার ভূমিকা প্রধান কেন?
উঃ মাতার দেহে শুধুমাত্র 'X' ক্রোমোজোম থাকে, কিন্তু পিতার দেহে 'X' ও 'Y' উভয় প্রকার ক্রোমোজোম থাকে। পিতার 'Y' ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে পুত্র সন্তান হয়। তাই লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার ভূমিকাই প্রধান।
৩৬. থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলি কী কী?
উঃ (১) তীব্র অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয়। (২) যকৃৎ ও প্লীহা আকারে বড় হয়ে যায়। (৩) দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ত্বক ফ্যাকাশে হয়।
৩৭. বর্ণান্ধতা কী? এটি কাদের বেশি হয়?
উঃ যে জিনগত ত্রুটির কারণে মানুষ লাল ও সবুজ বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে না, তাকে বর্ণান্ধতা বলে। এটি এক্স-ক্রোমোজোম বাহিত রোগ এবং পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
৩৮. হিমোফিলিয়া কেন হয়?
উঃ এটি একটি X-ক্রোমোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। রক্ত তঞ্চন সহায়ক ফ্যাক্টর (ফ্যাক্টর VIII বা IX) না থাকার ফলে শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধে না।
৩৯. জেনেটিক কাউন্সিলিং-এর গুরুত্ব লেখো।
উঃ বিবাহের পূর্বে হবু দম্পতির জিনগত রোগ আছে কিনা বা তাদের সন্তানদের মধ্যে রোগ সঞ্চারিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা নির্ণয় করে সর্তক করা হয়। এতে থ্যালাসেমিয়ার মতো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৪০. টেস্ট ক্রস (Test Cross) কাকে বলে?
উঃ কোনো জীবের জিনোটাইপ নির্ণয় করার জন্য সেই জীবের সাথে হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের সংকরায়ণ ঘটানোকে টেস্ট ক্রস বলে।
৪১. মেন্ডেলের পৃথকীভবন সূত্রটি লেখো।
উঃ একসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত সূত্র: কোনো জীবের সংকর অবস্থায় বিপরীতধর্মী ফ্যাক্টর বা জিনগুলি মিশ্রিত না হয়ে পাশাপাশি অবস্থান করে এবং গ্যামেট গঠনের সময় পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়।
৪২. ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপের সম্পর্ক কী?
উঃ জীবের বাহ্যিক প্রকাশিত বৈশিষ্ট্য হলো ফিনোটাইপ, আর জিনগত গঠন হলো জিনোটাইপ। জিনোটাইপই ফিনোটাইপকে নিয়ন্ত্রণ করে, তবে পরিবেশও এতে প্রভাব ফেলতে পারে। (S = G + E)।
৪৩. মিউটেশন বা পরিব্যক্তি কাকে বলে?
উঃ ক্রোমোজোম বা জিনের গঠনে হঠাৎ করে যে স্থায়ী এবং বংশগত সঞ্চারণযোগ্য পরিবর্তন ঘটে, তাকে মিউটেশন বলে।
৪৪. রাজকীয় রোগ বা রয়্যাল ডিজিজ কাকে বলা হয় এবং কেন?
উঃ হিমোফিলিয়াকে রাজকীয় রোগ বলা হয়। কারণ ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার বংশধরের মধ্যে এই রোগ প্রথম ছড়িয়ে পড়েছিল।
৪৫. ব্যাক ক্রস (Back Cross) কী?
উঃ F1 জনুর সংকর জীবের সাথে জনিতৃ জনুর (P জনু) যে কোনো জীবের (প্রকট বা প্রচ্ছন্ন) সংকরায়ণ ঘটানোকে ব্যাক ক্রস বলে।
অধ্যায় ৪: অভিব্যক্তি ও অভিযোজন
৪৬. জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সংক্রান্ত মিলার ও উরের পরীক্ষাটি সংক্ষেপে উল্লেখ করো।
উঃ মিলার ও উরে গবেষণাগারে আদিম পৃথিবীর পরিবেশ সৃষ্টি করে মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন ও জলীয় বাষ্পের মিশ্রণে বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ চালনা করেন। এর ফলে অ্যামাইনো অ্যাসিড (গ্লাইসিন, অ্যালানিন) সৃষ্টি হয়, যা প্রমাণ করে অজৈব পদার্থ থেকে জৈব অণু সৃষ্টি সম্ভব।
৪৭. ল্যামার্কের 'অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ' সূত্রটি কী?
উঃ ল্যামার্কের মতে, জীবদ্দশায় কোনো জীব পরিবেশের প্রভাবে যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, তা পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। একে অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ বলে।
৪৮. ডারউইনের 'যোগ্যতমের উদ্বর্তন' বলতে কী বোঝো?
উঃ জীবন সংগ্রামে লিপ্ত জীবদের মধ্যে যাদের দেহে পরিবেশের উপযোগী অনুকূল প্রকরণ বা ভেদ থাকে, তারাই কেবল বেঁচে থাকে এবং বংশবিস্তার করে। একে যোগ্যতমের উদ্বর্তন (Survival of the fittest) বলে।
৪৯. সমসংস্থ ও সমবৃত্তীয় অঙ্গের পার্থক্য লেখো।
উঃ সমসংস্থ অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন এক কিন্তু কাজ ভিন্ন (যেমন- মানুষের হাত ও পাখির ডানা)। সমবৃত্তীয় অঙ্গের কাজ এক কিন্তু উৎপত্তি ও গঠন ভিন্ন (যেমন- পতঙ্গের ডানা ও পাখির ডানা)।
৫০. নিষ্ক্রিয় বা লুপ্তপ্রায় অঙ্গ কাকে বলে? মানুষের একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম লেখো।
উঃ যে সব অঙ্গ পূর্বপুরুষের দেহে সক্রিয় ও কার্যক্ষম ছিল কিন্তু বর্তমানে কার্যহীন ও ক্ষয়প্রাপ্ত অবস্থায় দেহে অবস্থান করে, তাদের নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে। উদাহরণ: অ্যাপেনডিক্স বা ককিক্স।
৫১. সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের অভিযোজনগত গুরুত্ব কী?
উঃ সুন্দরবন অঞ্চলের মাটি লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত হওয়ায় মাটিতে অক্সিজেনের অভাব থাকে। তাই বাতাসের অক্সিজেন গ্রহণের জন্য সুন্দরী গাছের মূল অভিকর্ষের বিপরীতে মাটির উপরে উঠে আসে (নিউম্যাটোফোর), যা শ্বসনে সাহায্য করে।
৫২. ক্যাকটাসের পাতায় অভিযোজনগত পরিবর্তন উল্লেখ করো।
উঃ বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য ক্যাকটাসের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে। এতে জল অপচয় কমে এবং আত্মরক্ষায় সুবিধা হয়।
৫৩. রুই মাছের পটকার ভূমিকা কী?
উঃ রুই মাছের পটকা উদস্থিতিক অঙ্গ হিসেবে কাজ করে। পটকার রেড গ্রন্থি গ্যাস উৎপন্ন করে মাছকে ভাসতে এবং রেটি মিরাবিলি গ্যাস শোষণ করে মাছকে ডুবতে সাহায্য করে।
৫৪. পায়রার বায়ুথলি বা এয়ার স্যাকের দুটি কাজ লেখো।
উঃ (১) ওড়ার সময় দেহকে হালকা রাখতে সাহায্য করে। (২) ওড়ার সময় অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে (দ্বিশ্বসন)।
৫৫. উটের লোহিত রক্তকণিকার (RBC) বিশেষত্ব কী?
উঃ উটের RBC নিউক্লিয়াসবিহীন এবং ডিম্বাকার বা উপবৃত্তাকার। এটি জল নিরুদন সহ্য করতে পারে এবং রক্তরসে জলের পরিমাণ কমে গেলেও রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে না। আবার জল পানের পর এটি ফেটে না গিয়ে ২৪০% পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে।
৫৬. জীবন্ত জীবাশ্ম (Living Fossil) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে সব জীব সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও কোনো পরিবর্তন ছাড়াই বর্তমানেও বেঁচে আছে, কিন্তু তাদের সমসাময়িক জীবরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলে। যেমন- প্লাটিপাস, পেরিপেটাস।
৫৭. ভেনাস হৃতপিণ্ড কাকে বলে?
উঃ মাছের হৃতপিণ্ডে কেবল দূষিত রক্ত (CO2 যুক্ত) প্রবাহিত হয় এবং এতে দুটি প্রকোষ্ঠ (একটি অলিন্দ ও একটি নিলয়) থাকে। তাই মাছের হৃতপিণ্ডকে ভেনাস হৃতপিণ্ড বলে।
৫৮. শিম্পাঞ্জিরা কীভাবে উইপোকা শিকার করে?
উঃ শিম্পাঞ্জিরা গাছের সরু ডাল ভেঙে পাতা ঝরিয়ে নেয়। তারপর সেই কাঠি উইপোকার ঢিবির গর্তে প্রবেশ করায়। উইপোকারা কাঠিতে কামড় দিলে তারা কাঠিটি বের করে এনে উইপোকা খায়। এটি তাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।
৫৯. ঘোড়ার বিবর্তনের ধারাবাহিকতাটি লেখো।
উঃ ইওহিপ্পাস → মেসোহিপ্পাস → মেরিচিপ্পাস → প্লায়োহিপ্পাস → ইকুয়াস (আধুনিক ঘোড়া)।
৬০. প্রত্নজীববিদ্যা বা প্যালেওন্টোলজি কী?
উঃ জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবাশ্ম বা ফসিল সম্পর্কে আলোচনা, গবেষণা ও বিবর্তনের ইতিহাস জানা যায়, তাকে প্রত্নজীববিদ্যা বলে।
অধ্যায় ৫: পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ
৬১. নাইট্রোজেন সংবন্ধন বা ফিক্সেশন কাকে বলে?
উঃ যে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের মুক্ত নাইট্রোজেন নাইট্রোজেনঘটিত যৌগে পরিণত হয়ে মাটিতে বা জীবদেহে আবদ্ধ হয়, তাকে নাইট্রোজেন সংবন্ধন বলে। রাইজোবিয়াম, অ্যাজোটোব্যাকটার এতে সাহায্য করে।
৬২. অ্যামোনিফিকেশন ও ডিনাইট্রিফিকেশন এর পার্থক্য কী?
উঃ অ্যামোনিফিকেশন প্রক্রিয়ায় মৃত জীবদেহ থেকে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয় (ব্যাকটেরিয়া: ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস)। ডিনাইট্রিফিকেশন প্রক্রিয়ায় মাটির নাইট্রেট লবণ বিজারিত হয়ে পুনরায় মুক্ত নাইট্রোজেন গ্যাস হিসেবে বাতাসে ফিরে যায় (ব্যাকটেরিয়া: সিউডোমোনাস)।
৬৩. ইউট্রোফিকেশন কী? এর ফলে কী হয়?
উঃ জলাশয়ে ফসফেট ও নাইট্রেট জাতীয় সারের আধিক্যের ফলে শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদের অত্যধিক বৃদ্ধিকে ইউট্রোফিকেশন বলে। এর ফলে জলে অক্সিজেনের ঘাটতি (BOD বাড়ে) দেখা দেয় এবং মাছ মারা যায়।
৬৪. জৈব বিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন বলতে কী বোঝো?
উঃ খাদ্যশৃঙ্খলের বিভিন্ন ট্রফিক লেভেলে অপরিবর্তনীয় বিষাক্ত পদার্থ (যেমন- DDT, পারদ) জমা হওয়ার ফলে সর্বোচ্চ স্তরের খাদকদের দেহে বিষের মাত্রা সর্বাধিক হওয়ার ঘটনাকে জৈব বিবর্ধন বলে।
৬৫. গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নাম লেখো। বিশ্ব উষ্ণায়নে এদের ভূমিকা কী?
উঃ CO2, CH4 (মিথেন), CFC, N2O। এই গ্যাসগুলি সূর্য থেকে আসা তাপ শোষণ করে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে, ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে এবং সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে।
৬৬. ব্রংকাইটিস ও হাঁপানির (Asthma) কারণ কী?
উঃ বায়ুদূষণের কারণে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা (SPM), ধোঁয়া, পরাগরেণু শ্বাসনালীতে প্রবেশ করলে এই রোগ হয়। ধূমপান ব্রংকাইটিসের অন্যতম কারণ।
৬৭. জীববৈচিত্র্য বা বায়োডাইভারসিটি বলতে কী বোঝো?
উঃ কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রকার জীব (উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীব) এর জিনগত, প্রজাতিগত এবং বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্যকে একত্রে জীববৈচিত্র্য বলে।
৬৮. হটস্পট (Hotspot) কাকে বলে? হটস্পট নির্ধারণের দুটি শর্ত লেখো।
উঃ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর কিন্তু বিপন্ন অঞ্চলগুলিকে হটস্পট বলে। শর্ত: (১) প্রচুর সংখ্যক এন্ডেমিক (স্থানীয়) প্রজাতি থাকতে হবে। (২) প্রজাতিগুলি বিপন্ন বা ধ্বংসের মুখে থাকতে হবে।
৬৯. ইন-সিটু ও এক্স-সিটু সংরক্ষণের পার্থক্য কী?
উঃ ইন-সিটু: জীবকে তার নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ (যেমন- সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প)। এক্স-সিটু: জীবকে প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে সংরক্ষণ (যেমন- চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন)।
৭০. JFM এবং PBR এর পুরো নাম ও গুরুত্ব লেখো।
উঃ JFM (Joint Forest Management): বন দপ্তরের সাথে স্থানীয় মানুষের যৌথ উদ্যোগে জঙ্গল রক্ষা করা। PBR (People's Biodiversity Register): স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও তার ব্যবহারের জ্ঞান লিপিবদ্ধ করা দলিল।
৭১. সুন্দরবনের দুটি পরিবেশগত সমস্যা লেখো।
উঃ (১) বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি ও দ্বীপ নিমজ্জন। (২) মিষ্টি জলের অভাব ও মাটিতে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি।
৭২. রেড পান্ডা বিপন্ন হওয়ার দুটি কারণ লেখো।
উঃ (১) বাঁশ বন ধ্বংস হওয়ার ফলে খাদ্য ও বাসস্থানের অভাব। (২) চোরাশিকার ও চামড়ার জন্য হত্যা।
৭৩. নাইট্রোজেন চক্র ব্যাহত হলে কী হবে?
উঃ মাটিতে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য নষ্ট হবে, উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাহত হবে এবং প্রোটিন সংশ্লেষ না হওয়ায় সমগ্র জীবকুল সংকটে পড়বে। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ বাড়বে।
৭৪. ভারতের দুটি হটস্পটের নাম লেখো।
উঃ (১) পূর্ব হিমালয় (Eastern Himalaya), (২) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ও শ্রীলঙ্কা (Western Ghats and Sri Lanka)। এছাড়াও সুন্দাল্যান্ড ও ইন্দো-বার্মা।
৭৫. শব্দদূষণের দুটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখো।
উঃ (১) কানের পর্দা ফেটে গিয়ে বধিরতা সৃষ্টি হতে পারে। (২) রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদরোগ এবং স্নায়বিক দুর্বলতা বা অনিদ্রা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (বাছাই করা)
৭৬. অ্যাক্সন ও ডেনড্রনের কার্যগত পার্থক্য কী?
উঃ ডেনড্রন উদ্দীপনা গ্রহণ করে কোশদেহে পাঠায় (অন্তর্বাহী), আর অ্যাক্সন কোশদেহ থেকে উদ্দীপনা পরবর্তী নিউরোন বা কারক অঙ্গে পাঠায় (বহির্বাহী)।
৭৭. ক্রায়োপ্রিজারভেশন (Cryopreservation) কী?
উঃ যে এক্স-সিটু সংরক্ষণ পদ্ধতিতে মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (-196°C) তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনের মধ্যে উদ্ভিদের পরাগরেণু, বীজ বা প্রাণীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়, তাকে ক্রায়োপ্রিজারভেশন বলে।
৭৮. গমনে চালিকা শক্তি বা উদ্দেশ্যগুলি কী কী?
উঃ (১) খাদ্য অন্বেষণ, (২) আত্মরক্ষা, (৩) প্রজনন বা বংশবিস্তার, (৪) অনুকূল পরিবেশের সন্ধান।
৭৯. হরমোনকে রাসায়নিক দূত বা Chemical Messenger বলা হয় কেন?
উঃ হরমোন উৎস স্থল থেকে রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে বাহিত হয়ে দূরবর্তী কোশে রাসায়নিক বার্তা বহন করে এবং কোশের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে, তাই একে রাসায়নিক দূত বলে।
৮০. জিওট্রপিক চলন পরীক্ষাটি সংক্ষেপে লেখো।
উঃ একটি টবে লাগানো চারাগাছকে ভূমির সমান্তরালে রাখলে কিছুদিন পর দেখা যাবে কাণ্ডটি বেঁকে উপরের দিকে (নেগেটিভ জিওট্রপিক) এবং মূলটি বেঁকে নিচের দিকে (পজিটিভ জিওট্রপিক) বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৮১. স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক কী? এর প্রধান অংশগুলি কী?
উঃ স্নায়ুতন্ত্রের একক হলো নিউরোন। এর প্রধান অংশগুলি হলো—কোশদেহ, ডেনড্রন এবং অ্যাক্সন।
৮২. সেন্ট্রোজোমের ভূমিকা কী কোশ বিভাজনে?
উঃ প্রাণী কোশের বিভাজনের সময় সেন্ট্রোজোমের সেন্ট্রিওল দুটি বেমতন্তু বা স্পিন্ডল ফাইবার গঠন করে, যা ক্রোমোজোমগুলিকে দুই মেরুতে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
৮৩. জনন স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা কী?
উঃ (১) যৌন সংসর্গজনিত রোগ (STD) থেকে রক্ষা পাওয়া। (২) পরিবার পরিকল্পনা ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতনতা। (৩) সুস্থ সন্তান জন্মদান।
৮৪. লোকাস (Locus) কী?
উঃ ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট বিন্দুতে বা স্থানে জিন অবস্থান করে, সেই স্থানটিকে লোকাস বলে।
৮৫. সংকরায়ণ পরীক্ষায় ইমাস্কুলেশন বলতে কী বোঝো?
উঃ উভলিঙ্গ ফুলের পরাগধানী পরিপক্ক হওয়ার আগেই চিমটের সাহায্যে কেটে বাদ দেওয়াকে ইমাস্কুলেশন বলে। স্ব-পরাগযোগ রোধ করার জন্য এটি করা হয়।
৮৬. ঘোড়ার পায়ের অভিযোজন লেখো।
উঃ ঘোড়ার অগ্র ও পশ্চাৎ পদের তৃতীয় আঙুলটি খুরে রূপান্তরিত হয়েছে যা দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করে। বাকি আঙুলগুলি লুপ্তপ্রায়।
৮৭. ব্যাসল মেটাবলিক রেট (BMR) নিয়ন্ত্রণে থাইরক্সিনের ভূমিকা কী?
উঃ থাইরক্সিন হরমোন দেহ কোশে অক্সিজেনের ব্যবহার বাড়িয়ে বিপাকীয় ক্রিয়া বা BMR বৃদ্ধি করে। তাই একে ক্যালোরিজেনিক হরমোনও বলা হয়।
৮৮. অমরা বা প্লাসেন্টা কী? এর কাজ কী?
উঃ ভ্রূণ ও মাতৃদেহের সংযোগকারী কলাকে অমরা বলে। এর মাধ্যমে ভ্রূণ পুষ্টি ও অক্সিজেন পায় এবং রেচন পদার্থ মাতৃদেহে বর্জন করে।
৮৯. ক্যান্সার কোশের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উঃ (১) কোশগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হয়। (২) এই কোশগুলির অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার (মেটাস্ট্যাসিস) ক্ষমতা থাকে।
৯০. সুন্দরবনের বাঘের অস্তিত্ব সংকটের কারণ কী?
উঃ (১) বাসস্থান ধ্বংস ও মিষ্টি জলের অভাব। (২) খাদ্যের অভাব (হরিণ, শুয়োর কমে যাওয়া)। (৩) চোরাশিকার।
৯১. জাতীয় উদ্যান বা National Park কী? উদাহরণ দাও।
উঃ কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যে অরণ্যে বন্যপ্রাণীদের শিকার ও মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, তাকে জাতীয় উদ্যান বলে। যেমন—গরুমারা, কাজিরাঙা।
৯২. অভয়ারণ্য বা Sanctuary কী? উদাহরণ দাও।
উঃ রাজ্য সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যে অরণ্যে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষা দেওয়া হয় এবং অনুমতি সাপেক্ষে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারে, তাকে অভয়ারণ্য বলে। যেমন—জলদাপাড়া।
৯৩. অ্যাজমা বা হাঁপানির দুটি লক্ষণ লেখো।
উঃ (১) শ্বাসকষ্ট ও বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ হওয়া। (২) কাশির সাথে কফ বের হওয়া এবং দম বন্ধ হয়ে আসার অনুভূতি।
৯৪. পার্থেনোজেনেসিস বা অপুংজনি কী?
উঃ যে জনন প্রক্রিয়ায় অনিষিক্ত ডিম্বাণু থেকে সরাসরি অপত্য জীব সৃষ্টি হয়, তাকে পার্থেনোজেনেসিস বলে। যেমন—মৌমাছি (পুরুষ মৌমাছি), বোলতা।
৯৫. মাইটোকন্ড্রিয়া ও প্লাস্টিডের DNA-র গুরুত্ব কী?
উঃ এদের নিজস্ব DNA থাকায় এরা স্ব-প্রজননশীল অর্থাৎ নিজেরা বিভাজিত হতে পারে এবং কিছু প্রোটিন সংশ্লেষ করতে পারে। একে সাইটোপ্লাজমীয় বংশগতি বলে।
৯৬. ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকার কী?
উঃ যে বংশগতিতে কোনো বৈশিষ্ট্য দাদুর থেকে কন্যার মাধ্যমে নাতিকে (Grandson) সঞ্চারিত হয় (যেমন- বর্ণান্ধতা), তাকে ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকার বলে।
৯৭. জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ কী?
উঃ উন্নত গুণসম্পন্ন বা বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ, পরাগরেণু বা কলা এবং প্রাণীর শুক্রাণু বা ডিম্বাণু বৈজ্ঞানিক উপায়ে দীর্ঘকাল সংরক্ষণ করাকে জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ বলে।
৯৮. বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের একটি উদাহরণ দাও।
উঃ কচুরিপানা ও ল্যান্টানা ক্যামেরা (Lantana camara) বিদেশ থেকে ভারতে আসার ফলে স্থানীয় অনেক জলজ ও স্থলজ উদ্ভিদ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
৯৯. সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার (SPM) কী?
উঃ বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম কঠিন বা তরল কণা (যেমন- ধুলো, ধোঁয়া, এরোসল) যা শ্বাসগ্রহণের সময় ফুসফুসে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করে, তাদের SPM বলে।
১০০. বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের তিনটি জোনের নাম লেখো।
উঃ (১) কোর জোন (Core Zone) - মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। (২) বাফার জোন (Buffer Zone) - গবেষণা ও শিক্ষার জন্য উন্মুক্ত। (৩) ট্রানজিশন জোন (Transition Zone) - মানুষ বসতি স্থাপন করতে পারে।
এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং মাধ্যমিক ২০২৬ প্রস্তুতির জন্য Bigyanbook-এর সাথে থাকুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানান।
