Sem-4, Unit-7 দ্বাদশ শ্রেণীর পদার্থবিদ্যা: বিকিরণ ও পদার্থের দ্বৈতসত্ত্বা - প্রশ্ন উত্তর
১. প্রশ্ন: বিকিরণের দ্বৈতসত্ত্বা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বিকিরণ একইসাথে তরঙ্গ এবং কণা - উভয় ধর্মই প্রদর্শন করে, যাকে বিকিরণের দ্বৈতসত্ত্বা বলা হয়। আলোর ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়, যেখানে এটি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ (ব্যতিচার, অপবর্তন) এবং ফোটন কণা (আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া) উভয় রূপেই আচরণ করে।
২. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া (Photoelectric effect) কী?
উত্তর: নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলোর প্রভাবে কোনো ধাতব পৃষ্ঠ থেকে ইলেকট্রন নির্গমনের ঘটনাকে আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া বলে। এই নির্গত ইলেকট্রনগুলিকে আলোক-ইলেকট্রন বলে।
৩. প্রশ্ন: হার্টজ (Hertz) আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কে কী পর্যবেক্ষণ করেছিলেন?
উত্তর: হার্টজ পর্যবেক্ষণ করেন যে, অতিবেগুনী আলো ইলেকট্রিক ডিসচার্জকে সহজ করে। তিনি লক্ষ্য করেন যে, আলোর প্রভাবে ক্যাথোড প্লেট থেকে ঋণাত্মক আধান (ইলেকট্রন) নির্গত হয়।
৪. প্রশ্ন: লেনার্ড (Lenard) আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কে কী পর্যবেক্ষণ করেছিলেন?
উত্তর: লেনার্ড দেখান যে, আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় নির্গত ইলেকট্রনের সংখ্যা আলোর তীব্রতার উপর নির্ভরশীল, কিন্তু ইলেকট্রনের গতিশক্তি আলোর কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের নিচে (সূচনাকম্পাঙ্ক) কোনো ইলেকট্রন নির্গত হয় না, তীব্রতা যতই বেশি হোক না কেন।
৫. প্রশ্ন: আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণটি লেখো।
উত্তর: আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণটি হলো: E = hν = W₀ + Kmax যেখানে, E = আপতিত ফোটনের শক্তি, h = প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক, ν = আলোর কম্পাঙ্ক, W₀ = কার্য অপেক্ষক (Work function), Kmax = নির্গত ইলেকট্রনের সর্বোচ্চ গতিশক্তি।
৬. প্রশ্ন: কার্য অপেক্ষক (Work function) কী?
উত্তর: কার্য অপেক্ষক হলো সেই ন্যূনতম শক্তি, যা কোনো ধাতব পৃষ্ঠ থেকে একটি ইলেকট্রনকে মুক্ত করতে প্রয়োজন হয়। এর মান ধাতুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে এবং এটিকে W₀ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। W₀ = hν₀, যেখানে ν₀ হলো সূচনাকম্পাঙ্ক।
৭. প্রশ্ন: সূচনাকম্পাঙ্ক (Threshold frequency) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যে ন্যূনতম কম্পাঙ্কের আলো কোনো ধাতব পৃষ্ঠে আপতিত হলে আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া শুরু হয়, তাকে ওই ধাতুর সূচনাকম্পাঙ্ক বলে। এই কম্পাঙ্কের নিচে কোনো আলোক-ইলেকট্রন নির্গত হয় না।
৮. প্রশ্ন: সূচনাতরঙ্গদৈর্ঘ্য (Threshold wavelength) কী?
উত্তর: সূচনাকম্পাঙ্কের সাথে সংশ্লিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে সূচনাতরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে। এটি হলো সর্বোচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্য যা আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম। এর চেয়ে বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া ঘটাতে পারে না।
৯. প্রশ্ন: আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণ থেকে কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়?
উত্তর:
- আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া তাৎক্ষণিক ঘটনা।
 - ইলেকট্রনের গতিশক্তি আলোর তীব্রতার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীল।
 - একটি নির্দিষ্ট সূচনাকম্পাঙ্ক থাকে, যার নিচে কোনো ইলেকট্রন নির্গত হয় না।
 - নির্গত ইলেকট্রনের সংখ্যা আলোর তীব্রতার সমানুপাতিক।
 
১০. প্রশ্ন: আলোর কণা প্রকৃতি (Particle nature of light) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: আলোর কণা প্রকৃতি হলো এই ধারণা যে, আলো ফোটন নামক বিচ্ছিন্ন শক্তির প্যাকেট বা কোয়ান্টা দ্বারা গঠিত। এই ফোটনগুলির শক্তি E = hν, যেখানে h প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক এবং ν আলোর কম্পাঙ্ক। আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া এই কণা প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
১১. প্রশ্ন: ফোটনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
- ফোটন শূন্যস্থানে আলোর বেগে (c) চলে।
 - ফোটনের শক্তি E = hν এবং ভরবেগ p = h/λ।
 - ফোটনের স্থির ভর শূন্য।
 - ফোটন তড়িৎচুম্বকীয়ভাবে নিরপেক্ষ, অর্থাৎ এর কোনো আধান নেই।
 
১২. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি (de Broglie) প্রকল্প কী?
উত্তর: ডি ব্রগলি প্রস্তাব করেন যে, বিকিরণের মতো কণাগুলিরও (যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন) তরঙ্গসত্ত্বা রয়েছে। অর্থাৎ, গতিশীল কণার সাথে একটি তরঙ্গ (পদার্থ তরঙ্গ বা ডি ব্রগলি তরঙ্গ) জড়িত থাকে।
১৩. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সমীকরণটি লেখো এবং এর ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য (λ) এর সমীকরণটি হলো: λ = h/p = h/mv যেখানে, h = প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক, p = কণার ভরবেগ, m = কণার ভর, v = কণার বেগ। এই সমীকরণটি দেখায় যে, কণার ভরবেগ যত বেশি হবে, তার সাথে জড়িত তরঙ্গদৈর্ঘ্য তত কম হবে।
১৪. প্রশ্ন: পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতি (Wave nature of particles) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতি হলো এই ধারণা যে, ইলেকট্রন বা অন্যান্য কণাগুলিও তরঙ্গের মতো আচরণ করতে পারে। ডি ব্রগলির প্রকল্প অনুসারে, প্রতিটি গতিশীল কণার সাথে একটি তরঙ্গ যুক্ত থাকে, যার তরঙ্গদৈর্ঘ্য কণার ভরবেগের উপর নির্ভরশীল। ডেভিসন-জার্মার পরীক্ষা এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
১৫. প্রশ্ন: কেন আমরা দৈনন্দিন জীবনে বস্তুর ডি ব্রগলি তরঙ্গ প্রকৃতি দেখতে পাই না?
উত্তর: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ = h/mv। যেহেতু প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক (h) এর মান অত্যন্ত কম (6.626 × 10⁻³⁴ J.s), তাই বৃহৎ ভরের বস্তুর (যেমন একটি ক্রিকেট বল) ক্ষেত্রে mv এর মান অনেক বেশি হয়, ফলে λ এর মান এত কম হয় যে তা পরিমাপ করা সম্ভব হয় না। ইলেকট্রনের মতো ক্ষুদ্র কণার ক্ষেত্রে λ পরিমাপযোগ্য হয়।
১৬. প্রশ্ন: একটি ইলেকট্রনকে V বিভব পার্থক্যের মধ্য দিয়ে ত্বরান্বিত করলে তার ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে?
উত্তর: ইলেকট্রনের গতিশক্তি K = eV। আমরা জানি K = p²/2m, তাই p = √(2mK) = √(2meV)। সুতরাং, ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ = h/p = h/√(2meV)।
১৭. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আলোক-তড়িৎ প্রবাহ (Photocurrent) কী?
উত্তর: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় নির্গত ইলেকট্রনগুলির প্রবাহকে আলোক-তড়িৎ প্রবাহ বলে। এর মান আপতিত আলোর তীব্রতার উপর নির্ভরশীল।
১৮. প্রশ্ন: স্টপিং বিভব (Stopping potential) কী?
উত্তর: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় নির্গত সবচেয়ে গতিশীল ইলেকট্রনগুলিকেও থামাতে যে ন্যূনতম ঋণাত্মক বিভব প্রয়োগ করতে হয়, তাকে স্টপিং বিভব (V₀) বলে। এর ফলে আলোক-তড়িৎ প্রবাহ শূন্য হয়ে যায়। Kmax = eV₀।
১৯. প্রশ্ন: স্টপিং বিভব কোন বিষয়ের উপর নির্ভরশীল?
উত্তর: স্টপিং বিভব আপতিত আলোর কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীল, আলোর তীব্রতার উপর নয়।
২০. প্রশ্ন: ফোটনের ভরবেগ কত?
উত্তর: ফোটনের ভরবেগ p = E/c = hν/c = h/λ, যেখানে c আলোর বেগ।
২১. প্রশ্ন: একটি ফোটনের শক্তি 3 eV হলে তার কম্পাঙ্ক কত হবে? (h = 6.626 × 10⁻³⁴ J.s, 1 eV = 1.6 × 10⁻¹⁹ J)
উত্তর: E = 3 eV = 3 × 1.6 × 10⁻¹⁹ J = 4.8 × 10⁻¹⁹ J। আমরা জানি, E = hν, সুতরাং ν = E/h = (4.8 × 10⁻¹⁹) / (6.626 × 10⁻³⁴) ≈ 7.24 × 10¹⁴ Hz।
২২. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উত্তর:
- সোলার সেল (Solar Cell) বা সৌর কোষ।
 - ফটোভোল্টাইক ডিভাইস (Photovoltaic devices)।
 - ফটোগাফি এক্সপোজার মিটার।
 - স্বয়ংক্রিয় দরজা খোলার পদ্ধতি।
 
২৩. প্রশ্ন: ফোটন এবং ইলেকট্রনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
- ফোটনের স্থির ভর শূন্য, কিন্তু ইলেকট্রনের স্থির ভর আছে (9.1 × 10⁻³¹ kg)।
 - ফোটন আধানবিহীন, কিন্তু ইলেকট্রন ঋণাত্মক আধানযুক্ত।
 - ফোটন শুধুমাত্র আলোর বেগে চলে, ইলেকট্রনের বেগ পরিবর্তনশীল হতে পারে।
 
২৪. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গ কী?
উত্তর: যেকোনো গতিশীল কণার সাথে সংশ্লিষ্ট যে তরঙ্গ থাকে, তাকে ডি ব্রগলি তরঙ্গ বা পদার্থ তরঙ্গ বলে। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কণার ভরবেগের ব্যস্তানুপাতিক।
২৫. প্রশ্ন: ডেভিসন-জার্মার পরীক্ষা (Davisson-Germer experiment) কী প্রমাণ করেছিল?
উত্তর: ডেভিসন-জার্মার পরীক্ষা ইলেকট্রনের তরঙ্গ প্রকৃতি প্রমাণ করেছিল। তারা দেখিয়েছিলেন যে, ইলেকট্রন বীম ক্রিস্টাল দ্বারা অপবর্তিত হয়, যা কেবল তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য।
২৬. প্রশ্ন: X-রশ্মি এবং ফোটনের মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
উত্তর: X-রশ্মি হলো উচ্চশক্তির তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, যা ফোটন কণা দ্বারা গঠিত। অর্থাৎ, X-রশ্মি হলো ফোটনের একটি রূপ, যেখানে ফোটন হলো আলোর কোয়ান্টা।
২৭. প্রশ্ন: কেন আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ইলেকট্রন নির্গমন একটি তাৎক্ষণিক ঘটনা?
উত্তর: আইনস্টাইনের কণা তত্ত্ব অনুসারে, একটি ফোটন একটি ইলেকট্রনের সাথে সংঘর্ষ ঘটিয়ে তার সমস্ত শক্তি একটি ইলেকট্রনকে প্রদান করে। তাই শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কোনো সময় লাগে না, ইলেকট্রন নির্গমন তাৎক্ষণিক হয়।
২৮. প্রশ্ন: একটি কণার গতিশক্তি K হলে তার ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে?
উত্তর: আমরা জানি, K = p²/2m, তাই p = √(2mK)। সুতরাং, ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ = h/√(2mK)।
২৯. প্রশ্ন: উষ্ণতা বাড়ালে কার্য অপেক্ষকের কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর: কার্য অপেক্ষক প্রধানত ধাতুর পৃষ্ঠের অবস্থার উপর নির্ভর করে। উষ্ণতা বাড়ালে এর খুব বেশি পরিবর্তন হয় না, তবে অত্যন্ত উচ্চ উষ্ণতায় পারমাণবিক স্তরে কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
৩০. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আপতিত আলোর তীব্রতা বাড়ালে কী হবে?
উত্তর: আপতিত আলোর তীব্রতা বাড়ালে প্রতি সেকেন্ডে আপতিত ফোটনের সংখ্যা বাড়ে, যার ফলে নির্গত আলোক-ইলেকট্রনের সংখ্যা বাড়ে এবং আলোক-তড়িৎ প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। তবে নির্গত ইলেকট্রনের সর্বোচ্চ গতিশক্তি বা স্টপিং বিভবের কোনো পরিবর্তন হয় না।
৩১. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আপতিত আলোর কম্পাঙ্ক বাড়ালে কী হবে?
উত্তর: আপতিত আলোর কম্পাঙ্ক বাড়ালে নির্গত ইলেকট্রনগুলির সর্বোচ্চ গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ফলস্বরূপ স্টপিং বিভবের মান বৃদ্ধি পায়। তবে আলোক-তড়িৎ প্রবাহের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না, যদি আলোর তীব্রতা অপরিবর্তিত থাকে।
৩২. প্রশ্ন: কেন আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ফোটন তত্ত্ব অপরিহার্য?
উত্তর: তরঙ্গ তত্ত্ব আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারে না, যেমন তাৎক্ষণিক নির্গমন, সূচনাকম্পাঙ্কের অস্তিত্ব এবং ইলেকট্রনের গতিশক্তি কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীলতা। ফোটন তত্ত্ব এই সমস্ত ঘটনাকে সফলভাবে ব্যাখ্যা করে।
৩৩. প্রশ্ন: পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের জন্য কণার ভর কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য কণার ভর খুব কম হওয়া উচিত, যাতে তার সাথে জড়িত ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপযোগ্য হয় (যেমন ইলেকট্রন)।
৩৪. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি প্রকল্পের দুটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর:
- ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ (Electron Microscope) তৈরি।
 - কঠিন পদার্থের গঠন বিশ্লেষণ (যেমন ইলেকট্রন অপবর্তন)।
 
৩৫. প্রশ্ন: একটি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ কেন সাধারণ অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপের চেয়ে ভালো?
উত্তর: ইলেকট্রনের ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে অনেক কম। কম তরঙ্গদৈর্ঘ্য উচ্চতর বিভেদন ক্ষমতা প্রদান করে, যার ফলে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ অনেক ছোট বস্তুকেও স্পষ্ট দেখতে সক্ষম হয়।
৩৬. প্রশ্ন: নিউক্লিয়াসের ভিতরে ইলেকট্রন থাকতে পারে না কেন? ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যদি নিউক্লিয়াসের ভিতরে ইলেকট্রন থাকে, তবে তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য নিউক্লিয়াসের আকারের (প্রায় 10⁻¹⁴ m) সমান বা তার থেকে কম হতে হবে। এই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য ইলেকট্রনের শক্তি এত বেশি হয় যে এটি নিউক্লিয়াসের স্থিতিশক্তিকে অতিক্রম করে, যা অসম্ভব। তাই ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের ভিতরে থাকতে পারে না।
৩৭. প্রশ্ন: কোনো ধাতুর কার্য অপেক্ষক 2.5 eV হলে তার সূচনাকম্পাঙ্ক কত হবে?
উত্তর: W₀ = 2.5 eV = 2.5 × 1.6 × 10⁻¹⁹ J = 4 × 10⁻¹⁹ J। আমরা জানি, W₀ = hν₀, সুতরাং ν₀ = W₀/h = (4 × 10⁻¹⁹) / (6.626 × 10⁻³⁴) ≈ 6.03 × 10¹⁴ Hz।
৩৮. প্রশ্ন: যদি আপতিত ফোটনের শক্তি কার্য অপেক্ষকের চেয়ে কম হয়, তাহলে কী হবে?
উত্তর: যদি আপতিত ফোটনের শক্তি কার্য অপেক্ষকের চেয়ে কম হয় (E < W₀), তাহলে কোনো ইলেকট্রন ধাতব পৃষ্ঠ থেকে নির্গত হবে না, কারণ ইলেকট্রনকে মুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত শক্তি থাকবে না।
৩৯. প্রশ্ন: কোনো ফোটনের শক্তি 6.2 eV হলে তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত? (h = 6.626 × 10⁻³⁴ J.s, c = 3 × 10⁸ m/s, 1 eV = 1.6 × 10⁻¹⁹ J)
উত্তর: E = 6.2 eV = 6.2 × 1.6 × 10⁻¹⁹ J = 9.92 × 10⁻¹⁹ J। আমরা জানি, E = hc/λ, সুতরাং λ = hc/E = (6.626 × 10⁻³⁴ × 3 × 10⁸) / (9.92 × 10⁻¹⁹) ≈ 2 × 10⁻⁷ m = 200 nm।
৪০. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবকের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ = h/p। প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক (h) এই সমীকরণে একটি মৌলিক ধ্রুবক যা তরঙ্গ এবং কণা প্রকৃতির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।
৪১. প্রশ্ন: একটি বস্তুর গতিবেগ দ্বিগুণ করলে তার ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে?
উত্তর: λ = h/mv। যদি v দ্বিগুণ হয়, তাহলে নতুন তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ' = h/(m * 2v) = (1/2) * (h/mv) = λ/2। অর্থাৎ, তরঙ্গদৈর্ঘ্য অর্ধেক হয়ে যাবে।
৪২. প্রশ্ন: ফোটনের শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে তার ভরবেগের কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর: ফোটনের শক্তি E = pc, তাই p = E/c। ফোটনের শক্তি বাড়লে তার ভরবেগও সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পায়।
৪৩. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক এবং নির্গত ইলেকট্রনের সর্বোচ্চ গতিশক্তির লেখচিত্র কেমন হবে?
উত্তর: লেখচিত্রটি একটি সরলরেখা হবে, যার ছেদবিন্দু (y-অক্ষের উপর) কার্য অপেক্ষকের ঋণাত্মক মান (-W₀) দেবে এবং নতি (slope) প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক (h) এর মান দেবে।
৪৪. প্রশ্ন: একটি ইলেকট্রনের ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য 1 Å হলে তার ভরবেগ কত? (h = 6.626 × 10⁻³⁴ J.s, 1 Å = 10⁻¹⁰ m)
উত্তর: p = h/λ = (6.626 × 10⁻³⁴) / (10⁻¹⁰) = 6.626 × 10⁻²⁴ kg m/s।
৪৫. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আপতিত আলোর তীব্রতা এবং আলোক-তড়িৎ প্রবাহের মধ্যে সম্পর্ক লেখো।
উত্তর: আপতিত আলোর তীব্রতা বাড়লে আলোক-তড়িৎ প্রবাহ রৈখিকভাবে বৃদ্ধি পায়। কারণ, আলোর তীব্রতা বাড়লে প্রতি সেকেন্ডে আপতিত ফোটনের সংখ্যা বাড়ে, যার ফলে নির্গত ইলেকট্রনের সংখ্যাও বাড়ে।
৪৬. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি প্রকল্প কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: ডি ব্রগলি প্রকল্প পদার্থের তরঙ্গসত্ত্বা প্রতিষ্ঠিত করে এবং বিকিরণ ও পদার্থের দ্বৈতসত্ত্বাকে একটি সাধারণ কাঠামোতে নিয়ে আসে। এটি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪৭. প্রশ্ন: একটি কণার গতিশক্তি চারগুণ করলে তার ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে?
উত্তর: λ = h/√(2mK)। যদি K চারগুণ হয়, তাহলে K' = 4K। নতুন তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ' = h/√(2m * 4K) = h/(2√(2mK)) = (1/2) * (h/√(2mK)) = λ/2। অর্থাৎ, তরঙ্গদৈর্ঘ্য অর্ধেক হয়ে যাবে।
৪৮. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ব্যবহৃত ধাতুর কার্য অপেক্ষক বেশি হলে কী হবে?
উত্তর: যদি ধাতুর কার্য অপেক্ষক বেশি হয়, তাহলে ইলেকট্রন নির্গমনের জন্য উচ্চতর শক্তির ফোটন বা উচ্চতর কম্পাঙ্কের আলোর প্রয়োজন হবে। এর সূচনাকম্পাঙ্কও বেশি হবে।
৪৯. প্রশ্ন: কেন ডি ব্রগলি তরঙ্গকে "পদার্থ তরঙ্গ" বলা হয়?
উত্তর: যেহেতু এই তরঙ্গ গতিশীল কণার (যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন) সাথে যুক্ত থাকে, এবং এই কণাগুলি পদার্থের মূল উপাদান, তাই এই তরঙ্গকে পদার্থ তরঙ্গ বলা হয়।
৫০. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য একটি চার্জযুক্ত কণার জন্য এবং একটি নিউট্রাল কণার জন্য কীভাবে ভিন্ন?
উত্তর: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূত্র λ = h/mv চার্জ বা আধানের উপর নির্ভরশীল নয়। তাই একটি চার্জযুক্ত কণা (যেমন ইলেকট্রন) বা একটি নিউট্রাল কণা (যেমন নিউট্রন) উভয়ের জন্যই একই সূত্র প্রযোজ্য, যদি তাদের ভরবেগ একই হয়।
৫১. প্রশ্ন: আলোর তরঙ্গসত্ত্বার দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:
- ব্যতিচার (Interference)।
 - অপবর্তন (Diffraction)।
 - সমবর্তন (Polarization)।
 
৫২. প্রশ্ন: আলোর কণা প্রকৃতির দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:
- আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া (Photoelectric effect)।
 - কম্পটন ক্রিয়া (Compton effect)।
 
৫৩. প্রশ্ন: প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবকের (h) মাত্রা কী?
উত্তর: প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবকের মাত্রা হলো [ML²T⁻¹], যা কৌণিক ভরবেগের মাত্রার সমান। এর একক Joule-second (J.s)।
৫৪. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া এবং তাপ-আয়নিক নির্গমন (Thermionic emission) এর মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
উত্তর: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় আলোকের প্রভাবে ইলেকট্রন নির্গত হয়, যেখানে তাপ-আয়নিক নির্গমনে ধাতুকে উত্তপ্ত করার ফলে ইলেকট্রন নির্গত হয়।
৫৫. প্রশ্ন: কণার তরঙ্গ-কণা দ্বৈতসত্ত্বা কী?
উত্তর: এটি হলো এই ধারণা যে, কণাগুলি (যেমন ইলেকট্রন) পরিস্থিতিতে কণা এবং তরঙ্গ উভয় বৈশিষ্ট্যই প্রদর্শন করতে পারে, ঠিক যেমন বিকিরণ করে। এটি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি মৌলিক ধারণা।
৫৬. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূত্র থেকে বোর মডেলের কোয়ান্টাইজেশন শর্ত কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?
উত্তর: বোরের তত্ত্ব অনুসারে, ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট স্থিতিশীল কক্ষপথে ঘোরে যেখানে তার কৌণিক ভরবেগ nh/2π এর পূর্ণ গুণিতক। ডি ব্রগলি তরঙ্গ অনুসারে, একটি স্থিতিশীল কক্ষপথে ইলেকট্রনের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কক্ষপথের পরিধির পূর্ণ গুণিতক হওয়া উচিত (2πr = nλ)। λ = h/mv প্রতিস্থাপন করলে 2πr = n(h/mv) বা mvr = nh/2π, যা বোরের কোয়ান্টাইজেশন শর্ত।
৫৭. প্রশ্ন: একটি ফোটন 400 nm তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো থেকে নির্গত হলে তার শক্তি কত হবে?
উত্তর: E = hc/λ = (6.626 × 10⁻³⁴ × 3 × 10⁸) / (400 × 10⁻⁹) ≈ 4.97 × 10⁻¹⁹ J।
৫৮. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ব্যবহৃত ক্যাডমিয়াম (Cadmium) ধাতুর একটি বিশেষত্ব কী?
উত্তর: ক্যাডমিয়ামের কার্য অপেক্ষক তুলনামূলকভাবে কম, তাই এটি দৃশ্যমান আলো বা অতিবেগুনী আলোর প্রভাবেও আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া প্রদর্শন করতে পারে।
৫৯. প্রশ্ন: ফোটনের স্থির ভর শূন্য কেন?
উত্তর: আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুসারে, যে কণা আলোর বেগে চলে তার স্থির ভর শূন্য হতে হবে। ফোটন যেহেতু শূন্যস্থানে আলোর বেগে চলে, তাই এর স্থির ভর শূন্য।
৬০. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য কোন কণা সবচেয়ে উপযুক্ত?
উত্তর: ইলেকট্রন, কারণ এর ভর অত্যন্ত কম, ফলে এর ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলো বা এক্স-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কাছাকাছি হয়, যা সহজেই অপবর্তন দ্বারা পরিমাপ করা যায়।
৬১. প্রশ্ন: আলোর তরঙ্গ তত্ত্ব আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ার কোন বিষয় ব্যাখ্যা করতে পারে না?
উত্তর:
- আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ার তাৎক্ষণিক নির্গমন।
 - সূচনাকম্পাঙ্কের অস্তিত্ব।
 - নির্গমিত ইলেকট্রনের গতিশক্তি আলোর কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীলতা, তীব্রতার উপর নয়।
 
৬২. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ কোষ (Photoelectric cell) কীভাবে কাজ করে?
উত্তর: আলোক-তড়িৎ কোষে একটি আলোক-সংবেদনশীল ক্যাথোড এবং একটি অ্যানোড থাকে। আলো ক্যাথোডে আপতিত হলে ইলেকট্রন নির্গত হয় এবং অ্যানোডের দিকে আকৃষ্ট হয়, ফলে একটি বিদ্যুৎ প্রবাহ তৈরি হয়। এই প্রবাহ আলোর তীব্রতার উপর নির্ভরশীল।
৬৩. প্রশ্ন: আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণটি ফোটনের কোন ধর্মকে প্রমাণ করে?
উত্তর: আইনস্টাইনের সমীকরণটি আলোর কণা প্রকৃতি (ফোটন) কে প্রমাণ করে, যেখানে শক্তি বিচ্ছিন্ন প্যাকেটে থাকে এবং একটি ফোটন একটি ইলেকট্রনকে শক্তি স্থানান্তরিত করে।
৬৪. প্রশ্ন: ইলেকট্রনের ভর 9.1 × 10⁻³¹ kg এবং বেগ 10⁶ m/s হলে তার ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য কত হবে?
উত্তর: λ = h/mv = (6.626 × 10⁻³⁴) / (9.1 × 10⁻³¹ × 10⁶) ≈ 0.728 × 10⁻⁹ m = 0.728 nm।
৬৫. প্রশ্ন: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ইলেকট্রন নির্গমনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি কোথা থেকে আসে?
উত্তর: আপতিত আলোর ফোটন থেকে এই শক্তি আসে। একটি ফোটন তার সমস্ত শক্তি একটি ইলেকট্রনকে প্রদান করে, যা ইলেকট্রনকে ধাতুর কার্য অপেক্ষক অতিক্রম করে মুক্ত হতে সাহায্য করে।
৬৬. প্রশ্ন: ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূত্রের প্রয়োগ কোথায় দেখা যায়?
উত্তর:
- ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে।
 - পারমাণবিক এবং সাব-পারমাণবিক কণার আচরণ বিশ্লেষণে।
 - ক্রিস্টাল স্ট্রাকচার বিশ্লেষণে।
 
৬৭. প্রশ্ন: কোয়ান্টাম দক্ষতা (Quantum efficiency) কী?
উত্তর: কোয়ান্টাম দক্ষতা হলো প্রতি আপতিত ফোটনের জন্য নির্গত আলোক-ইলেকট্রনের সংখ্যার অনুপাত। এটি একটি পদার্থের আলোক-তড়িৎ সংবেদনশীলতার পরিমাপ।
৬৮. প্রশ্ন: একটি ধাতুর কার্য অপেক্ষক যদি 3.0 eV হয়, তাহলে 500 nm তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোতে আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া ঘটবে কি না?
উত্তর: E = hc/λ = (6.626 × 10⁻³⁴ × 3 × 10⁸) / (500 × 10⁻⁹) ≈ 3.97 × 10⁻¹⁹ J। E (eV) = (3.97 × 10⁻¹⁹) / (1.6 × 10⁻¹⁹) ≈ 2.48 eV। যেহেতু ফোটনের শক্তি (2.48 eV) কার্য অপেক্ষক (3.0 eV) এর চেয়ে কম, তাই আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া ঘটবে না।
৬৯. প্রশ্ন: আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণকে কীভাবে গতিশক্তির সাপেক্ষে লেখা যায়?
উত্তর: Kmax = hν - W₀ অথবা Kmax = h(ν - ν₀), যেখানে ν₀ হলো সূচনাকম্পাঙ্ক।
৭০. প্রশ্ন: পদার্থবিজ্ঞানে দ্বৈতসত্ত্বার ধারণা কী তাৎপর্য বহন করে?
উত্তর: দ্বৈতসত্ত্বার ধারণা চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের জন্ম দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, অতি ক্ষুদ্র কণার আচরণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বস্তুর আচরণের থেকে ভিন্ন এবং এটি কোয়ান্টাম জগতের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
বিকিরণ ও পদার্থের দ্বৈতসত্ত্বা: গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (২০টি)
১. বিকিরণের দ্বৈতসত্ত্বা: আলো একইসাথে তরঙ্গ এবং কণা (ফোটন) উভয় রূপেই আচরণ করে।
২. আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া: আলোর প্রভাবে ধাতব পৃষ্ঠ থেকে ইলেকট্রন নির্গমনের ঘটনা।
৩. হার্টজ ও লেনার্ডের পর্যবেক্ষণ: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ায় ইলেকট্রন নির্গমনের প্রাথমিক গবেষণা।
৪. আইনস্টাইনের আলোক-তড়িৎ সমীকরণ: E = hν = W₀ + Kmax, আলোর কণা প্রকৃতি ব্যাখ্যা করে।
৫. কার্য অপেক্ষক (W₀): ইলেকট্রন মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম শক্তি, ধাতুর বৈশিষ্ট্য।
৬. সূচনাকম্পাঙ্ক (ν₀): আলোক-তড়িৎ ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আলোর ন্যূনতম কম্পাঙ্ক।
৭. ফোটন: আলোর শক্তির কোয়ান্টা বা প্যাকেট, যার শক্তি E = hν এবং ভরবেগ p = h/λ।
৮. ফোটনের স্থির ভর: শূন্য।
৯. ফোটনের আধান: শূন্য (আধানবিহীন)।
১০. আলোক-তড়িৎ প্রবাহ: নির্গত ইলেকট্রনের সংখ্যা আপতিত আলোর তীব্রতার সমানুপাতিক।
১১. স্টপিং বিভব (V₀): নির্গত ইলেকট্রনের সর্বোচ্চ গতিশক্তি থামাতে প্রয়োজনীয় ঋণাত্মক বিভব (Kmax = eV₀)।
১২. স্টপিং বিভবের নির্ভরশীলতা: আপতিত আলোর কম্পাঙ্কের উপর নির্ভরশীল, তীব্রতার উপর নয়।
১৩. পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতি (ডি ব্রগলি): গতিশীল কণার সাথে একটি তরঙ্গ জড়িত থাকে।
১৪. ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য: λ = h/p = h/mv, কণার ভরবেগের ব্যস্তানুপাতিক।
১৫. ডেভিসন-জার্মার পরীক্ষা: ইলেকট্রনের তরঙ্গ প্রকৃতি প্রমাণ করে।
১৬. ডি ব্রগলি তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং গতিশক্তি: λ = h/√(2mK)।
১৭. ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ: ইলেকট্রনের ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে উচ্চ বিভেদন ক্ষমতা অর্জন করে।
১৮. আলোর তরঙ্গ ধর্ম: ব্যতিচার, অপবর্তন, সমবর্তন।
১৯. আলোর কণা ধর্ম: আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া, কম্পটন ক্রিয়া।
২০. প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক (h): তরঙ্গ ও কণা প্রকৃতির মধ্যে সংযোগকারী একটি মৌলিক ধ্রুবক (6.626 × 10⁻³⁴ J.s)।
